শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

আলী আমজদের ঘড়িঘরের সীমানায় নির্মিতব্য স্থাপনা অপসারণের দাবিতে স্মারকলিপি

সিলেটের ১৫১ বছরের ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়িঘরে ভেতরে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ ও নির্মিতব্য স্থাপনাটি অপসারণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

সোমবার সকালে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কাছে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা, সংক্ষুব্দ নাগরিক আন্দোলন, পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।

এসময় পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্টের পক্ষে ডা. শাহ মোস্তফা জামান, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা সিলেটের সদস্য সচিব আব্দুল করিম কিম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের প্রধান পরিচালক শামসুল বাসিত শেরো, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের বেলায়েত হোসেন লিমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, সিলেট শহরের প্রাচীনতম ও প্রতীকখ্যাত স্থাপত্য “আলী আমজদের ঘড়িঘর’ কেবল একটি স্থাপনা নয় এটি আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের প্রতীক। ১৮৭৪ সালে পৃথিমপাশার জমিদার নবাব আলী আমজদ খান এটি নির্মাণ করেন। শতবর্ষ অতিক্রান্ত এই স্থাপনাটি সিলেটকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিত করেছে। সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য কেবল একটি ঘড়িঘর নয়, বরং সিলেটের অস্তিত্ব, ইতিহাস ও নাগরিক ঐতিহ্যের দৃশ্যমান প্রতীক।

তবে গভীর দুঃখ ও উদ্বেগের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে, এই ঐতিহ্যবাহী ঘড়িঘরের সীমানার ভেতরেই নতুন একটি স্থাপনার (জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে "জুলাই স্তম্ভ") নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। সিলেটের মুক্তিকামী সংগ্রামের ইতিহাসে জুলাই আন্দোলনের গুরুত্ব অস্বীকারযোগ্য নয়। কিন্তু ঐতিহাসিক "আলী আমজদের ঘড়িঘর"-এর গায়ে নতুন স্থাপনা চাপিয়ে দেওয়া সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও স্থাপত্যরক্ষার মৌলিক নীতির পরিপন্থী।

এতে আরও বলা হয়- ইতোমধ্যেই সিলেট শহরে রিকাবিবাজারস্থ কবি নজরুল অডিটোরিয়ামের পাশে একটি জুলাই স্তম্ভ নির্মাণাধীন রয়েছে। ফলে একই উদ্দেশ্যে আরেকটি কাঠামো তৈরি করা অপ্রয়োজনীয়। এছাড়া ঐতিহাসিক স্থাপনার পাশে নতুন স্থাপনা নির্মাণ এর ঐতিহাসিক মর্যাদা, স্থাপত্যের নান্দনিকতা ও স্বকীয়তাকে বিকৃত করবে। এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এটি আমাদের দায়িত্বহীনতা ও ঐতিহ্য অবমাননার নজির হয়ে থাকবে।

স্মাকলিপিতে আরও বলা হয়- সিলেটের নাগরিকসমাজ, পরিবেশবাদী ও ঐতিহ্য সংরক্ষণকামী মানুষ একবাক্যে বিশ্বাস করে যে, জুলাই আন্দোলনের স্মৃতি সংরক্ষণের বিকল্প স্থান সিলেট শহরে বহু রয়েছে। সেখানে ফলক, স্মারক কিংবা স্তম্ভ নির্মাণ করা যেতে পারে। কিন্তু তা কখনোই সিলেটের প্রতীকখ্যাত ঐতিহ্যের ক্ষতির বিনিময়ে নয়।

‘অতএব, আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি করছি যে ঐতিহাসিক “আলী আমজদের ঘড়িঘর’ এর ঐতিহ্য, নান্দনিকতা ও আইনগত মর্যাদা রক্ষার্থে চলমান নতুন স্থাপনার কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং ইতোমধ্যে নির্মিত কাঠামো অপসারণের জন্য জরুরি প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’

এই সম্পর্কিত আরো