সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হেমু ভাটপাড়া গ্রামের করিচ নদীর পাড় অবৈধভাবে কেটে মাটি বিক্রি করছে স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামীলীগের ২ নেতা। অবৈধভাবে নদীর মাটি কেটে বিক্রি করায় একদিকে যেমন মহাসড়কের করিচর ব্রীজ হুমকির মুখে পড়েছে অন্যদিকে হুমকিতে মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভুমিও । এ ছাড়াও ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ৪ গ্রামের একমাত্র সড়ক । উপজেলা প্রশাসনকে বারবার অবহিত করা হলেও তিনি কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় সিন্ডিকেট। এতে একদিকে মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভুমি বিলীন হচ্ছে, অন্যদিকে নদীভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। আর হুমকির মুখে পড়েছে করিচ নদীর জীববৈচিত্র্য।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হেমু করিচর ব্রীজের নিচে থেকে এটি এস্কেভেটর মেশিন বসিয়ে প্রায় শতাধিক ড্রাম ট্রাক দিয়ে সন্ধ্যার পর থেকে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এই চক্র মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভুমি ধ্বংষ করে সেখানকার মাটি নিয়ে সকরারি জমি দখল ও একটি খেলার মাঠ দখলে নেয়ার পায়তারা করছে। এরা মূলত জমি দখরদার বাহীনি।
স্থানীয়রা জানায়, সরকারের অনুমতি না নিয়ে প্রতিদিন রাতে ড্রাম ট্রাকে করে নদীর মাট কেটে নিয়ে সরকারি খাস জমি দখল করছে পাশাপাশি একটি বৃহৎ খেলার মাঠ দখল করে নিচ্ছে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতারা মিলে এমন ধ্বংস কাজে মেতে উঠেছে। সামনেই বর্ষা মৌসুম। এলাকাবাসীর ধারণা এভাবে রাতে মাটি বিক্রি হলে ৪ গ্রামের একমাত্র সড়কটি রক্ষা করা যাবেনা। এই বর্ষা মৌসুমেই ভেঙে পড়তে পারে মহাসড়কে নির্মিত সেতুটি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, ফতেপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হক, সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা অসংখ্য মামলার আসামী আমির উদ্দিন, আব্দুল খালিক, আজির উদ্দিন, ফারুক আহমদ, নূর উদ্দিন, রফিক আহমদ, জয়নাল আহমদ সহ আরো অনেকের দল ক্ষমতায় না থাকলেও তার প্রভাব একটুও কমেনি। দাপটের সহিত চলাফেরা তাদের। এ ছাড়াও রয়েছে তার বিশাল বাহিনী। সে সবসময় বাহিনী নিয়ে চলাফেরা করে। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। প্রতিবাদ করলে তার ওপর হামলা চালায়। আইনের তোয়াক্কা না করে তারা তাদের মতো এলাকা পরিচালনা করে। তারা আরও জানায়, প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা রয়েছে আমির উদ্দিন ও আব্দুল হকের। এভাবেই করিচ নদী থেকে লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রি ও জায়গা দখল করছে তারা।
অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আমির উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, মাটি কাটার জন্য তিনি গ্রামবাসীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন। কিছু জানতে হলে গ্রামে গিয়ে জানার কথা জন্য বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে শালিক রুমাইয়া বলেন, উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভূমি) এসিল্যান্ডকে বলে দিয়েছি, তিনি ব্যবস্থা নেবেন।