সুনামগঞ্জ জেলার মাসিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সভা রোববার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিত কুমার চন্দের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির, সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল হাসান রাসেল, ডিডি এলজি মোহাম্মদ মতিউর রহমান, পিপি অ্যাডভোকেট মল্লিক মঈনুদ্দিন সোহেল, অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট শেরেনুর আলী, সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অ্যাডভোকেট শামস উদ্দিন আহমেদ, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুর রহমান, তাহিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান কামরুল, এনএসআই ডিডি মোহাম্মদ কবির আহমেদ, খেলাফত মসলিস নেতা সাখাওয়াত হোসেন মোহন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রেসক্লাব সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, ক্যাব সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির সহসভাপতি সেলিম আহমদ তালুকদার, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় নেতা ইমন দোজা প্রমুখ।
সভায় সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন নদীতে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন ও নদী পাড় কাটা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়, ইতোমধ্যেই তিনটি টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে প্রতিদিনই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে শুধু প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরও সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি সুনামগঞ্জ শহরের যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। এছাড়া, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিষয়ে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট দ্রুত পেশ করার তাগিদ দেন। তিনি জেলার বিভিন্ন স্পটে মাদক দ্রব্যের অপব্যবহার বন্ধ এবং সীমান্ত অতিক্রম করে মাদক প্রবেশ না করার ব্যাপারে আহ্বান জানান। সুনামগঞ্জ শহরের সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের স্পিড ব্রেকারগুলো মানুষের অসুবিধার কারণ হওয়ায় সেগুলো কমানোর দাবি জানানো হয়। সুনামগঞ্জ শহরের ধোপাকালী শ্মশান ঘাটের জায়গা নিয়ে দু'পক্ষের সমস্যা সমাধানের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পৌর প্রশাসককে দুই পক্ষের কাগজপত্র দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, সুনামগঞ্জ জেলায় আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সবার সহযোগিতা আহ্বান করেন। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, জেলায় জন্ম নিবন্ধন নিয়ে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। ৪৮২ জন মা-বাবার বয়স আঠারো বছরের নিচে হওয়ার কারণে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা এ বিষয়ে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় জেলা প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি দেবেন বলেও জানান।