সিলেটের জকিগঞ্জে ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভাঙার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় বিশ্বাসসহ চারজনকে শোকজ নোটিশ জারি করেছে জকিগঞ্জ সহকারী জজ আদালত।
বিলেরবন্দ গ্রামের বাসিন্দা এনাম উদ্দিনের দায়ের করা ১০৯/২০২৫ নম্বর দেওয়ানি মামলার প্রেক্ষিতে আদালত এই নির্দেশ দেন। মামলায় ইউএনও মাহবুবুর রহমান, এসিল্যান্ড প্রণয় বিশ্বাস, স্থানীয় বাসিন্দা লিটন আহমদ ও তার স্ত্রী জেসমিন বেগমকে প্রতিপক্ষ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৪ সেপ্টেম্বর কোনো লিখিত নোটিশ বা আইনানুগ প্রক্রিয়া ছাড়াই এনাম উদ্দিনের বাড়ির সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে ২৮ সেপ্টেম্বর জকিগঞ্জ ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে এনাম উদ্দিন ও তার ভাই এমাদ উদ্দিনের নামে একটি নোটিশ পাঠানো হয়, যেখানে উল্লেখ করা হয়— “সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর মৌখিক নির্দেশে এই নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।”
বাদী এনাম উদ্দিন অভিযোগ করেন, “কোনো নোটিশ ছাড়াই আমাদের প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। এমনকি রাতের অন্ধকারে লিটন আহমদ আবারও দেয়ালের অংশ ভেঙে ফেলেন। তার ঘরের দক্ষিণ পাশে বিকল্প রাস্তা থাকা সত্ত্বেও ষড়যন্ত্র করে আমাদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, আগে লিটন আহমদের সঙ্গে পাশের আরেক পরিবারের রাস্তা নিয়ে বিরোধ ছিল। পরে পরিকল্পিতভাবে তার পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এতে এলাকায় উত্তেজনা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এনাম উদ্দিন আদালতের শরণাপন্ন হলে সহকারী জজ আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রতিপক্ষদের ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ আহমদ বলেন, “এটি সম্পূর্ণ দেওয়ানি মামলা। আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে, আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।”
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় বিশ্বাস বলেন, “উর্ধ্বতন কর্মকর্তার মৌখিক নির্দেশে দেওয়াল ভাঙা হয়েছে। আদালতের নোটিশ হাতে পাইনি, পেলে আইনগতভাবে জবাব দেওয়া হবে।”
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান জানান, “বিষয়টি পৌরসভার, তাই পৌর প্রশাসক এ বিষয়ে ভালোভাবে জানেন।”
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের এমন আচরণ প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট করছে।