সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আজ মহাঅষ্টমী। সারা দেশের মতো সিলেটেও উৎসবমুখর পরিবেশে পালিত হচ্ছে মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা। ভক্তবৃন্দের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বিশেষ এ দিনটি। ঢাক-ঢোল, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত মন্ডপগুলোয় সকাল থেকেই ভক্তদের ঢল নামে।
এবার সিলেট জেলায় প্রথমবারের মতো পালিত হচ্ছে কুমারী পূজা। অষ্টমী পূজার মূল তাৎপর্য পূর্ণতা পায় কুমারী পূজায়। ২ থেকে ১২ বছর বয়সী কন্যাশিশুকে দেবীর প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়ে তাঁকে শুদ্ধ পোশাকে দেবীর রূপে সাজানো হয়। পূজার আসনে বসিয়ে তাঁর চরণ ধৌত করে ফুল, চন্দন, সিঁদুর ও ধূপ-ধুনায় অর্চনা করা হয়। এভাবেই পালন করা হয় কুমারী পূজা। ভক্তদের বিশ্বাস, এভাবে কুমারী পূজিত হলে দেবী দুর্গার শক্তি ও পবিত্রতা সঞ্চারিত হয়, জীবনের অশুভ দূর হয় এবং পরিবারে সুখ-সমৃদ্ধি আসে।
সিলেটের পূজামন্ডপগুলোতে ভক্তদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ভক্তরা সারিবদ্ধ হয়ে পুষ্পাঞ্জলি দেন এবং দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন শান্তি, সমৃদ্ধি ও অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য। মন্ডপজুড়ে ছিল ভক্তিমুখর পরিবেশ।
সকাল ১০টা থেকে শুরম্ন হয় পুষ্পাঞ্জলি, এরপর ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। দুপুরে পরিবেশিত হয় মহাপ্রসাদ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে সন্ধিপূজা, যা অষ্টমীর অন্যতম গুরম্নত্বপূর্ণ আচার। এতে মন্ডপজুড়ে সৃষ্টি হবে আরও এক আধ্যাতিক পরিবেশ।
জানা যায়, কুমারী পূজার প্রচলন বহু প্রাচীন। স্বামী বিবেকানন্দ কুমারী পূজাকে সর্বজনীন মর্যাদা দিয়ে সমাজে প্রসারিত করেন। বর্তমান সময়ে এটি শুধু ধর্মীয় আচার নয়, বরং নারী-পুরুষ সমতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত হয়। নারী যে শক্তির উৎস-এই বার্তাই বহন করে কুমারী পূজা।
গত রোববার মহাষষ্ঠীর পাঠ, কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। সোমবার মহাসপ্তমীতে কলারম্ভ, ঘট প্রতিস্থাপন ও দেবীর মহাঅষ্টমের মাধ্যমে শুরম্ন হয় মূল পূজার আনুষ্ঠানিকতা। আজ মহাঅষ্টমীর মধ্য দিয়ে পূজা ভক্তি ও উল্লাসে ভরে উঠেছে।
এ বছর দেবী দুর্গা মর্ত্যলোকে এসেছেন গজ বা হাতিতে চড়ে। শাস্ত্র মতে, এটি সমৃদ্ধি ও প্রাচুর্যের প্রতীক। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবীর এ আগমন ভালো বৃষ্টিপাত, অধিক ফসল ও দেশের সামগ্রিক শান্তি-সমৃদ্ধির ইঙ্গিত বহন করছে