সিলেট নগরীতে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে পুলিশের চলমান অভিযানের প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন ব্যাটারি চালিত রিকশা চালকরা।
বৃহস্পতিবার সকালে আলিয়া মাদ্রাসা ময়দানে জড়ো হন। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে অবস্থান, সড়ক দখল করে বিক্ষোভ প্রদর্শন, সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর, সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটক ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালকরা।
দুপুরে পারমিটের দাবিতে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মিছিল বের করে তারা। ‘সিলেট ব্যাটারী চালিত রিকশা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে বাঁশ ফেলে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশি উপস্থিতিতে বড় ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়নি, তবে চালকদের উত্তেজিত স্লোগানে পুরো এলাকা সরব হয়ে ওঠে।
মিছিল শেষে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দিকে রওনা হন। পথে পথে তারা ‘পারমিট চাই’, ‘রিকশা চালাতে দাও’, ‘গরিবের পেটে লাথি মারো না’—এমন নানা স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন নগরীর রাজপথ। মিছিল শেষে চালকরা বন্দরবাজার পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে সমবেত হন এবং সেখান থেকেও একই দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিকশাচালকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা সেখানেই দাবির পক্ষে স্মারকলিপি পেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সিলেট মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
আন্দোলনের এক পর্যায়ে শতাধিক রিকশা চালকরা সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালান। এসময় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন নগর ভবনের দিকে।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পৌনে ৪টার দিকে সরেজমিনে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় ঘুরে আন্দোলনকারীদের দেখা পাওয়া যায় নি।
এর আগে, গত তিনদিন ধরে সিলেট নগরীতে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে চালানো বিশেষ অভিযানে শতাধিক যানবাহন আটক ও মামলা করা হয়েছে। বুধবার অভিযানের তৃতীয় দিনে ৬৯টি যানবাহন আটক করা হয়, যার মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যাই ছিল সবচেয়ে বেশি—মোট ৪৪টি।
এছাড়াও ৩১টি যানবাহনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক করা যানবাহনের মধ্যে সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, পিকআপ, ট্রাক ও ব্যক্তিগত গাড়িও ছিল।
অভিযানের অংশ হিসেবে নগরীর শামীমাবাদ এলাকায় পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে ১০টি গ্যারেজের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ১৪৫ ফুট বৈদ্যুতিক তার, ১৮০টি চার্জিং পয়েন্ট ও ১০টি অবৈধ মিটার জব্দ করা হয়েছে।
তবে রিকশা চালকদের দাবি, তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাঁচতে চান। পারমিট না দিয়ে রিকশা আটক ও মামলা দিয়ে তাদের পথে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।