সিলেট-১ আসনের আওতাভূক্ত সিলেট মহানগরীর ২৫, ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডকে সিলেট-৩ আসনের অর্ন্তভূক্তির জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উপস্থাপিত প্রস্তাবনা বাতিল হওয়ায় ওয়ার্ডবাসীর পক্ষ থেকে এই সুহৃদ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, সিলেটের উন্নয়নে জনগণের ঐক্য ও রাজনৈতিক সম্প্রীতি এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন। বর্তমান সরকারের আমলে সিলেটবাসী ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে। সিলেটে বড় কোন উন্নয়ন প্রকল্প গত এক বছরে আসেনি। এমনকি, সরকারী উন্নয়ন বরাদ্দের বিশাল একটি অংশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় ফেরত গেছে। বিশেষ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণ কাজে সরকারী দফতরগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বের পথ বেছে নিয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সিলেটবাসীর বঞ্চনা কেবল দীর্ঘায়িত হবে। তাই সিলেটের উন্নয়নের প্রশ্নে এই জনপদের সকল রাজনৈতিক দলকে এক হতে হবে।
শনিবার রাতে নগরীর ২৫ নং ওয়ার্ডের মোমিনখলায় আয়োজিত সুহৃদ সমাবেশে সিলেটের প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এসব অভিমত ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট জেলা শাখার আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর ফখরুল ইসলাম ও সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী।
সিলেট ডায়াবেটিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ রোটারিয়ান এমএ মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সাবেক সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমাদের মাঝে রাজনৈতিক মত পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু, সিলেটের উন্নয়নের প্রশ্নে এই জনপদের সকল রাজনৈতিক দলকে এক হতে হবে। গত এক বছরে সিলেটবাসীর প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির বিস্তর ফারাক দেখা দিয়েছে। সকল ক্ষেত্রেই সিলেটবাসী বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সারা দেশের সাথে সিলেটের উন্নয়ন বৈষম্য দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় সিলেটবাসীকে সাথে রাজনৈতিক দলগুলোকে সোচ্চার হতে হবে।
সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, বিগত সরকারের আমলে সিলেটে একের সরকারী খাতে লুটপাট হয়েছে। ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সিলেটে কোন উন্নয়ন প্রকল্পই যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। এ অবস্থার অবসানকল্পে সবাইকে এক মঞ্চে দাঁড়াতে হবে।
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, সিলেট মহানগরীর অবিচ্ছেদ্য অংশ ২৫, ২৬ ও ২৭ নং ওয়ার্ডকে সিলেট-১ আসন থেকে বিচ্ছিন্ন করার যে অপচেষ্টা হয়েছিল, স্থানীয় জনসাধারণ ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করেছেন। এভাবে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নগরবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে প্রতিবাদ করতে হবে।
মহানগর জামায়াতের আমীর ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তগুলো এখন উপর থেকে চাপিয়ে দেয়ার একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। জনমতকে উপেক্ষা করে কোন সিদ্ধান্ত্ই সুফল বয়ে আনবেনা।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, সিলেট মহানগরীতে বর্তমানে সমস্যার পাহাড় জমেছে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে নগরবাসীর সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
সমাজসেবী মনসুর হোসেন খান ও সুমন আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুরুব্বী বীর মুক্তিয্দ্ধোা আলহাজ্ব রফিকুল হক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টা সাংবাদিক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, সিলেট জেলা জজ আদালতের অতিরিক্তি জিপি অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা, অ্যাডভোকেট মামুন হোসেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সহসভাপতি আফজল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোর্শেদ আহমদ মুকুল, ২৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আখতার রশিদ চৌধুরী, ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ২৭ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল জলিল নজরুল, ২৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সেলিম আহমদ রনি, বিএনপি নেতা আবুল কালাম, প্রবীণ সমাজসেবী প্রদীপ কর, সাহেদ আরবী প্রমুখ।
সমাবেশে দোয়া পরিচালনা করেন সিলেট জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান।