কুলাউড়া উপজেলার পূর্ব পাহাড়ে অবস্থিত কেদারপুর টি কোম্পানীর মালিকানাধীন ঝিমাই চা বাগানের অভ্যন্তরে বসবাসরত কতিপয় খাসিয়া সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারের লিজকৃত জায়গায় প্রতিষ্টিত চা বাগানের উপর দিয়ে এবং বাগানের জায়গায় জবরদখল করে বসবাসরত কতিপয় খাসিয়া তাদের বসতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে উঠে পড়ে লেগেছে বলে বাগান কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে ঝিমাই চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো: মনিরুজ্জামান সাম্প্রতি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি আবেদন করেছেন।
আবেদন সুত্রে জানা গেছে, ঝিমাই চা বাগানটি কেদারপুর টি কোম্পানীর অধীনে সরকার থেকে ৬শ ৬১ একর জায়গা লিজ গ্রহন পূর্বক চা উৎপাদন করে আসছে। বর্তমানে চা বাগানটির র্দীঘ মেয়াদী লীজের মেয়াদ সীমা আগামী ২০৫২ সাল পর্যন্ত। বাগানের পাহারাদার হিসাবে বসানো কতিপয় খাসিয়া ঝিমাই চা বাগানের অভ্যন্তরে বসতি স্থাপন করে তাদের সংখ্যা বাড়িয়েছে। বাগানের অভ্যন্তরে খাসিয়ারা বসবাস করলেও তাদের মালিকানাধীন কোন জায়গা নেই। বাগানের অভ্যন্তরে বসবাস করে খাসিয়ারা নানাভাবে চা বাগানের উন্নয়ন কর্মকান্ড এবং বাগান সম্প্রসারনে বাধা দিয়ে আসছে। বর্তমান আইনে বনভূমি কিংবা সরকারী জায়গায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কোন বিধান নেই সেটা জেনেও খাসিয়ারা পিডিবির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সাথে আতাত করে ঝিমাই চা বাগানের অভ্যন্তর দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগের পাযতারায় লিপ্ত রয়েছে ।
অপরদিকে খাসিয়াদের এ অবৈধ তৎপরতার খবর পেয়ে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন বাগানের চা শ্রমিকরা। চা শ্রমিক নেতা আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করে বলেন, এমনিতে চা বাগানটির বৃহৎ একটি অংশ খাসিয়ারা জবর দখল রেখেছে। উপরুন্তু তাদের দখল পাকাপোক্ত করতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাচ্ছে। আমরা চা শ্রমিকরা তা শক্ত হাতে প্রতিহত করব।
এব্যাপারে ঝিমাই চা বাগানের ব্যবস্থাপক মো:মনিরুজ্জামান জানান, চা বাগানের জায়গায় অবৈধ জবরদখলকারীদেরকে কোন ধরনের বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে সম্প্রতি তিনি মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন। খাসিয়াদের যেখানে তাদের ভূমির মালিকানা নেই সেখানে তারা বিদ্যুৎ সংযোগের পায়াতারা করে মূলত বাগানের আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি প্রশাসনকে শক্তহাতে মোকাবেলা করার জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন,ঝিমাই চা বাগানটি সরকার থেকে লিজ গ্রহন করে যথারীতি সরকারের সকল ট্যাক্স ভ্যাট পরিশোধ করে বাগান পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু খাসিয়ারা নানা সময় নানা অজুহাতে বাগানের উন্নয়ন বিঘ্নিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে।
পিডিবির কুলাউড়ার সহকারী প্রকৌশলী হাবিব উল্ল্যাহ জানান,ঝিমাই চা বাগানের অভ্যন্তরে বসবাসরত খাসিয়াদের পরিবারে বিদ্যুত সংযোগের বিষয়ে তাঁর জানা নেই। এ বিষয়ে বাগান কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আইনমোতাবেক দেখা হবে।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহি উদ্দিন জানান, ঝিমাই পুঞ্জিতে বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে অফিসিয়ালি কোন পত্র কিংবা তথ্য আমার কাছে আসেনি। বাগান কর্তৃপক্ষের আপত্তির পত্রটি পেয়েছি।