সরকার পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করলেও অবাদে চলছে পলিথিনের ব্যবহার। বিভিন্ন ধরনের পলিথিন ব্যাগ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের বিস্কিট, রুটি, পাউরুটি এসব যেকোন ধরনের প্রশাধনী পলিথিনের প্যাকেট পরিবেশের দুষন করছে। পলিথিন দিনের পর দিন মাসের পর মাস নদীগর্ভে ফেলায় নদীর পানি দুষিত হচ্ছে পাশাপাশী মৎস্যের
বংশ বিস্তার কমে যাচ্ছে।
জামালগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ২ভাগে বিভক্ত করেছে সুরমা নদী। নদীর একপাশে জামালগঞ্জ উপজেলা সদর সহ নোয়াগাও, লালপুর, হারুন মাকেট, মোনসুরাবাদ বাজার, মন্নান ঘাট বাজার, সেলিমগঞ্জ বাজার, গজারিয়া বাজার ও আমানীপুর বাজার রয়েছে। নদীর অপর পার্শে ঐতিহ্যবাহী সাচনা বাজার, দর্লভপুর বাজার রামনগর বাজার কামিনীপুর বাজার, গোলকপুর বাজার, বাবুপুর বাজার রয়েছে। এভাবেই দুটি অংশে বিভক্ত। দিন দিন সুরমা নদীর নাব্যতা কমছে। চড় জেগেছে বিভিন্ন এলাকায়। সুরমা নদীর ২ পাড় এখন ময়লার ভাগার হিসাবে পরিনিত হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিটি বাজারের নদীর পাড়ে এখন ময়লার স্তুপ। উপজেলার সুরমা নদীর ২ পাড়ে এখন এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
নদীর দুই অংশের মধ্যে সাচনা বাজার ব্যবসা বানিজ্যের কেন্দ্র বিন্দু। অন্যদিকে জামালগঞ্জ উপজেলার সকল সরকারী অফিস আদালত সহ সবজি বাজার। দুই পাড়েই ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করতে মালী রয়েছে। তারা প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে নদীতে ফেলছে। আবার তা আগের রুপ ধারন করছে। এলাকার সচেতন মহল মনে করছেন। সরকারী ভাবে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের নির্দেশ জারি হলেও সেটি কার্যকর হয়নি। বিভিন্ন ধরনের পলিথিন ব্যাগই সুরমা নদীর পানি এবং মাছের প্রজনন ব্যহত করছে। এজন্য জনসাধারনকে সচেতন করে তুলতে হবে পাশাপাশী প্রতিটি বাজারে ময়লা ফেলার আলাদা ব্যবস্থা এবং তা পুরে ফেলার ব্যবস্থা সরকারী ভাবে করলে নদীর দুষন অনেকটাই কমে যাবে।
সরজমিনে দেখা যায় জামালগঞ্জে সুরমা নদীর উত্তর পাড়ে ঐতিহ্যবাহী সাচনাবাজার, রামনগর বাজার, মমিনপুর, বাজার দূর্লভপুর বাজার প্রতিটি বাজারেই নদীরপাড়ে পলিঠিন সহ ময়লা আবর্জনা ঠাসা। সুরমা নদীর দক্ষিন পাড় জামালগঞ্জ সদর উপজেলা বাজার, নোয়াগাও, চানপুর, হারুন মার্কেট, মনসুরাবাদ বাজার, লালপুর,বাজার, মন্নানঘাট বাজার, গজারিয়া বাজার , আমানীপুর বাজার রয়েছে। প্রতিটি বাজারেই নদীর পাড়ে পলিথিনের ব্যাগ ময়লা আবর্জনা ভরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। এসব স্থানে ককশিট প্লাষ্টিকের বোতল, বিভিন্ন খাদ্য পন্যের খালি পলিথিনের প্যাকেট সহ ময়লা আবর্জনা এবং পরিত্যাক্ত প্লাষ্টিক বস্তাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে।
সাচনা বাজারের পথচারী আবুল কালাম বলেন ময়লা আবর্জনা ফেলে নদীর পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এতে করে দিন দিন নদীর নাব্যতা কমছে। পাশাপাশি ময়লা আবর্জনার কারনে পরিবেশ দুষন সহ মাছের প্রজনন কমে যাচ্ছে। এবং নদীর ধারন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
জামালগঞ্জের ফল ব্যবসায়ী আলী হোসেন বলেন নদীর পাড়ে পলিথিনের ময়লা আবর্জনা ভরে ফেলা হচ্ছে সুরমা নদীতে। নদীর পানিতে পলিথিন ভেসে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এবং দিন দিন নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পাচ্ছে। উপজেলার প্রতিটি বাজার থেকে মাঝে প্রায় শত শত টন ময়লা ফেলা হচ্ছে। নদীর পাড়ে সবাই ময়লা ফেলেন এতে
কেউ নিষেধ দেয়না।
পরিবেশ ও হাওড় উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা জানান, নদীতে প্লাষ্টিক ফেলা হলে এই প্লাষ্টিক ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে পানিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ছড়ায় যা পানি দূষন করে এবং মানব ও প্রাণীর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়।
মাছ ও অন্যান্য প্রানী প্লাষ্টিক খেলে সেই প্লাষ্টিক মানুষের খাবারের মাধ্যমে শরীরে ডুকে পরে যা দীর্ঘ মিয়াদে নানা রুগের কারন হতে পারে।
সাম্প্রতিক ভাবে গবেষনায় মানুষের রক্তে মাইক্রো প্লাষ্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে যা প্রমান করে যে, এটি আমাদের রক্তে প্রবাহে প্রবেশ করতে পারে। প্লাষ্টিক বর্জ নদীর প্রবাহ আটকে দিতে পারে। ফলে বন্যার ঝুকি বাড়ে এবং কৃষিকাজ বা নৌ চলাচলে সমাস্যা হয়। পরিবেশ রক্ষায় ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নদীতে প্লাষ্টিক দূষন রোধ করতে হবে। এই জন্য মানুষের সচেতনতা এবং প্রশাসনের তৎপরতা জরুরী। পলিথিনের বিকল্প সহজলভ্যতা না থাকায় বাজারে এখনো পলিথিনের ব্যগের উৎপাদন ও ব্যবহার করছে সবাই। পলিথিন নিষিদ্ধ হলেও অভিযান চোখে পড়েনা। তিনি আরো বলেন প্রতিটি হাটবাজারে পলিথিন সহ ময়লা আবর্জনা রাখার জন্য বড় করে ডাষ্টবিন করা দরকার। কয়েকদিন পর পর ডাষ্টবিনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলে পরিবেশ সহ নদীর পানি দূষিত অনেকটাই কমে যাবে।