সিলেটে ২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সিলেটে বিআইডব্লিউটিএ‘র টেন্ডার বাগিয়ে নিয়েছে গোয়াইনঘাটে পলাতক ফ্যাসিস্ট সুবাস দাশ ও মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট। মূলত আড়ালে থেকে সুবাস-মুজিব তাদের রেখে যাওয়া দোসরদের মাধ্যমে এই কোটি টাকার টেন্ডার মাত্র ৫৭ লাখ টাকায় বাগিয়ে নিয়েছে।
জানা যায়, নৌপথ বিআইডব্লিউটিএর আশুগঞ্জ-ভৈরববাজার নদীবন্দর শাখার অধীন এর মধ্যে গোয়াইনঘাটের বাউরবাগ রানীগঞ্জ গ্রাম পর্যন্ত ডকি নদ, গোয়াইন নদী- পিয়াইন নদী ও চেঙ্গের খাল ঘাট প্রতিবছর ইজারা দেয় বিআইডব্লিউটিএ। মেসার্স এস এল এন্টারপ্রাইজ ওই সময় ইজারা নেয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে উল্লিখিত নৌপথের ইজারামূল্য ছিল ১ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এরপর আর কোন ইজারা দেওয়া হয়নি।
কিন্তু দুই বছর পর ইজারা মূল্য বৃদ্ধি না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অদৃশ্য আতাঁতে ৫৭ লাখ টাকায় ইজারা ছিনিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগের দোসর মনিরুল কবির। এতে করে সরকারের দুই কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। মনিরুল কবির এর আগে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এল এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজারের দায়িত্বে পালন করছিলেন। মেসার্স এস এল এন্টারপ্রাইজের মালিক গোয়াইনঘাটের আওয়ামী লীগ নেতা সুবাস দাস ও মুজিবুর রহমান। এখন তারা নেপথ্যে থেকে সিন্ডিকেট তৈরি করে মনিরুল কবিরকে দিয়ে দুই কোটি টাকার টেন্ডার মাত্র ৫৭ লাখ টাকায় হাতিয়ে নিয়েছেন। এনিয়ে বিএনপি পন্থী ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তৎকালীন সময় করোনা পরিস্থিতির কারণে লকডাউনে নৌপথ বন্ধ থাকে। পরে একটি সেতু রক্ষায় নৌচলাচল বন্ধের ঘোষণায় দুই কোটি টাকা ক্ষতি হওয়ার কথা জানিয়ে ইজারার টাকা ফেরত চেয়েছিলো ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। এরপর ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এল এন্টারপ্রাইজ ক্ষতি হওয়ার দোহাই দিয়ে বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিনা টেন্ডারে বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ইজারা ছাড়া খাস কালেকশন আদায় করেন মেসার্স এস এল এন্টারপ্রাইজ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ বন্দর বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ঘাট, পয়েন্ট ও খাল টোল স্টেশন সমূহের জন্য ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের ইজারা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ২৯ এপ্রিল টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। এতে করে উক্ত টেন্ডার ৫৭ লাখ টাকায় হাতিয়ে নিয়েছেন জনৈক মনিরুল কবির।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট বিএনপি নেতা এনামুল হক জানান, পতিত শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাঁদের দোসরা এখনো বহাল তবিয়নে। গোয়াইনঘাটে ১৭ বছর সুবাস দাস ও হাজী মুজিবুর রহমান এমন কোন অনৈতিক কর্মকান্ড নেই যে তারা করেননি। বিএনপির লোকজনের উপর হামলা-মামলার মূল মাস্টারমাইন্ড তারা। কিন্তু দেশের বাইরে থেকেও তারা এখন টেন্ডারবাজী চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের সহযোগিতা করছে একদল আমলা। আমরা অভিলম্বে এই টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।