ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় গ্রেফতার হয়েছেন সিলেট আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের চার নেতা। গ্রেফতার হওয়া নেতারা হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য ইলিয়াছ আহমদ জুয়েল, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি ও সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ সভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন। শনিবার গভীর রাতে কলকাতা শহরের হাতিয়াড়া এলাকার একটি বাসা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে মেঘালয় রাজ্যের শিলং পুলিশ। সোমবার রাত ১১টার দিকে তাদেরকে ডাউকির জুওয়াই থানায় নিয়ে আসা হয় বলে জানিয়েছেন শিলং টাইমসের সাংবাদিক অঘোর পরাগ।
এর আগে তাদেরকে রোববার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বারাসাত কলকাতা জেলা দায়রা আদালতের বিশেষ ক্রিমিনাল আদালতে তোলা হয়। কিন্তু বিচারক উপস্থিত না থাকায় ভারতীয় আইন অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিলংয়ের স্থানীয় আদালতে অপরাধীদের হাজির করা হবে এমন আশ্বাসে ট্রানজিট রিমান্ড না নিয়েই তাদের মেঘালয়ের শিলং নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশের বরাত দিয়ে ওই সাংবাদিক জানান, ডাউকির জুওয়াই পুলিশ স্টেশনে গ্রেফতারকৃত চারজনসহ ছয় বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) অধীন ১১৮(১) মিথ্যা বিবৃতি/মিথ্যা নথি ব্যবহার), ৩০৯(৪) ও ৩১০(২) (ডাকাতি, ছিনতাই), ৩২৪(৪) (বিপজ্জনক অস্ত্র দ্বারা আঘাত করা) এবং ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্ট মামলা রয়েছে। মামলা নং ১৯(১০)/২৪। অক্টোবর মাসে দায়েরকৃত এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে জুওয়াই থানা পুলিশ। এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসর আজিজ ও সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু।
কলকাতায় অবস্থানরত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সিলেট জেলা কমিটির এক নেতা জানান, কলকাতা শহরের হাতিয়াড়া এলাকার একটি বাসা থেকে শনিবার ভোরে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে এজাহারে নাম না থাকায় সাহেল আহমদ নামের একজনকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া চার নেতাকে রোববার বারাসাত কোর্টে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে স্থানান্তরের আদেশ দেন। এর পর পুলিশ তাদের শিলংয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়।
কলকাতায় অবস্থানরত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল জানান, গ্রেফতার হওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে শিলংয়ের ডাউকি থানায় একটি মামলা (নং-১৯(১০)২৪) রয়েছে। এ মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় আদালতে সেখানকার আইনজীবীদের মাধ্যমে তাদেরকে আইনি সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে পাড়ি জমান। তাদের মধ্যে গ্রেফতার হওয়া চার নেতাও ছিলেন। শিলং শহরে তারা প্রথমে একটি হোটেলে অবস্থান নেন। পরে তারা শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। ৫ নভেম্বর তারা শিলং থেকে কলকাতায় চলে যান। মেঘালয়ের ডাউকির জুওয়াই থানায় একটি মামলায় সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।