মৌলভীবাজারের রাজনগরে আলহাজ্ব লিলজান বিবি মহিলা মাদ্রাসা কর্তৃক ঐতিহাসিক বদর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৭ রমজান ইসলামের প্রথম যুদ্ধ 'বদর যুদ্ধ'। মূর্খতার তিমিরাচ্ছন্নতার অবসান ঘটিয়ে একত্ববাদের ঝাণ্ডা নিয়ে শান্তি ও সফলতার চাদরে আচ্ছন্ন ঐশী নূরের আলোকে জগদ্বাসীর জন্য ইসলামের মতো মহান পবিত্র নেয়ামতের সুশীতল ঝর্ণাধারা প্রবহমান থাকার বিষয়টি সুনিশ্চিত হয়েছিল বদরের প্রাঙ্গণ থেকেই; এ জন্যই মানবসভ্যতার ইতিহাসে এই দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।
এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার মুহতামি মাওলানা আব্দুর রহমান সোহেল। ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন আলহাজ্ব লিলজান মহিলা মাদরাসার শায়খুল হাদিস হযরত মাওলানা মুফতি মোশাহিদ আলী কাসেমী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন শাইখে সানি হযরত মাওলানা আবুল খায়ের বিশ্বনাথী, মৌলভীবাজার নূরুল কোরআন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমদ বিলাল, জামিউল উলুম বাছির মহল মাদ্রাসার নাজিমে তালিমাত মাওলানা এমদাদুল হক তালুকদার, মাওলানা এনামুল হক নোমান শ্রীমঙ্গলী, আমিরপুর মাদ্রাসার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ওলিদ আহমদ প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন জামেয়া হেমায়েতুল ইসলাম টাইটেল মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা হুসাইন আহমদ, মাওলানা তোফাজ্জুল হক, মাওলানা নূরুল ইসলাম, বানারাই মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম হাফিজ বদরুল ইসলাম, আব্দুল ওয়াহিদ আশিক, মাওলানা আব্দুল ওয়াহিদ, জাদুরগোল মাদ্রাসার মোহতামিম কামরুল ইসলাম রাফে, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সম্পাদক মাস্টার আব্দুল হাকিম প্রমুখ।
জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের ঐতিহাসিক এক অসম লড়াইয়ের নাম বদর যুদ্ধ। আল্লাহ তাআলার অশেষ দয়া ও মেহেরবানিতে সেখানে মজলুম বিজয়ী হয়েছে। দীর্ঘ ১৩টি বছর মহানবী (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম মক্কার কাফিরদের নির্যাতন সয়ে গেছেন। ধৈর্যধারণ ও ক্ষমা করতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁরা আদিষ্ট ছিলেন। মক্কার কুরাইশদের জুলুমের সীমা ছাড়িয়ে গেলে মদিনায় হিজরতের পর আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের অস্ত্র ধারণের অনুমতি দেন। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘(কাফিরদের পক্ষ থেকে) যাদের সঙ্গে যুদ্ধ করা হচ্ছে, তাদের (নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য যুদ্ধ করার) অনুমতি দেওয়া হলো। কারণ তাদের প্রতি জুলুম করা হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের জয়যুক্ত করতে পরিপূর্ণ সক্ষম।’ (সুরা হজ: ৩৯)
বদর যুদ্ধের শুরু ও শেষের ঘটনাপ্রবাহে বহুবিধ শিক্ষা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম শিক্ষা হলো, জালিমকে আল্লাহ তাআলা একটা সময় পর্যন্ত সুযোগ দিলেও শেষ বিচারে মজলুমের হাতেই জালিমের শোচনীয় পরাজয় ঘটে। মজলুম ইতিহাসের পাতায় স্বমহিমায় টিকে থাকে, জালিম ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।