নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে দু’দলের লোকদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘঠেছে। পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিসের একদল বাহিনী ঘটনাস্থল পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে আহত হয়েছে কমপক্ষে ২৫ জন।
এদের মধ্যে আশংখ্যা জনক অবস্থায় সবুজ মিয়া (৪০), দেলোয়ার হোসেন (৩০)সহ ১০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে ভর্তি, বাকী আহতদের নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিবদমান দু’টি গ্রুপের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ, খুন, বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে চলেছে। এ নিয়ে দু’ দলেরই একাধিক মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। এক দিকে রয়েছেন আলমগীর খানঁ, অপর দিকে রয়েছেন সালামত খানঁ। গত ২৬ জানুয়ারী বিকালে দু’দলের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুর্ব আক্রোশে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই মামলা দায়ের করেন। আলমগীর খানেঁর লোকজন আদালত থেকে জামিনে আসলেও সালামত খানের লোকজন এফআইআর মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়, উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের কালাভরপুর গ্রামের মৃত আজিজুল খানেঁর ছেলে আলমগীর খানগং ও সালামত খানঁগংদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার’কে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছে। উভয় পক্ষের মধ্যে একাধিক মামলা মোকদ্দমাও রয়েছে। পুর্ব শক্রতার জেরধরে শুক্রবার (১৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ বাধেঁ। এতে ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে প্রতিপক্ষ সালামত খানেঁর লোকজন আলমগীর খানেঁর লোকজনের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাটসহ নানু মিয়ার ছেলে রুমেল মিয়া ও রোমান মিয়ার ঘরে এবং নজির মিয়া, দেলোয়ার মিয়া, লায়েক মিয়াগংদের ৬টি খড়ের লাইছে (ফেইন) আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ৯৯৯ হতে খবর পেয়ে অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেনর দিকনিদের্শনায় ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ দুলাল মিঞার নেতৃত্বে একদল পুলিশ এবং ফায়ারসার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। সংঘর্ষে আহতরা হলেন রুমেল মিয়া, নোবেল মিয়া, জামাল খান, ফয়সল খান, আলমগীর খান, লিটন মিয়া. কোকিল মিয়া, হোসাইন তালুকদার, রোমান মিয়া, তাহির মিয়া, নানু মিয়া, তোফায়েল মিয়া, আবু সামাদ, ফয়সাল মিয়া, দিলোয়ার হোসেন, তাহির মিয়া, আব্দুল কালাম, করিম মিয়া, আঃ হামিদ, আতাউর রহমান, আঃ লতিফ। আহতদের সিলেট, নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ও প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে ও বাড়ীঘর লুটপাটের ঘটনায় কয়েক লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন।
নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ দুলাল মিঞা জানান, পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে এলাকার আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা ও ক্ষোভ রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতির উপর পুলিশি নজরদারী অব্যাহত রয়েছে।