নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে ওসমানীনগর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসীর পরিবার। মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের উত্তর কালনীরচর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল হক ছানু মিয়া বলেন, উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের কালনীচর বাজারে তার মালিকানাধীন মার্কেটসহ বাড়ির সম্পত্তি দখলের পায়তারায় লিপ্ত রয়েছে একই গ্রামের মৃত হামিদ উল্যাহর ছেলে জুনাইদ ও মৃত রুকুম উল্যাহর ছেলে আকাইদ মিয়া, খনখার মিয়া, ছানু মিয়ার ছেলে শিবরুল আমিন, আকাইদ মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া, ও রোমন মিয়া, আশিক মিয়ার ছেলে ফাহিম আহমদ ধন মিয়া, সাজিদ মিয়ার ছেলে মবারক হোসেন মেন্দি মিয়াসহ তাদের একটি চক্র। সম্প্রতি আদালতের রায়ে কালনীচর বাজারে প্রবাসীর মালিকানাধীন মার্কেটের জায়গা বুঝে পেলে অভিযুক্তরা বিভিন্ন প্রবাসী পরিবারকে হয়রানি করে আসছে।
ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের উদ্যাগ নিলে জোনাইদ ও তাদর দলবল নির্মাণ কাজে বাঁধা দিয়ে প্রবাসীর কাছে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের কথা মত চাঁধা না দেয়ায় বিগত ২৮ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে গ্রামে ডাকাত ঢুকছে বলে মসজিদের মাইকে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে প্রবাসী বাড়ী ও পরিবারের সদস্যের উপর হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হয়। ঘটনার সময় স্থানীয়রা নম্বার ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানালে পুলিশের এসআই মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দ্রুত ঘটনাস্থলে একটি টীম পৌছায়। পুলিশ সদস্যরা বাড়ি থেকে বেড় হয়ে রাস্তায় আসলে জুনাইদ বাহিনীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তাদের উপর অতর্কিত এলোপাতারি হামলা করে। ঘটনাস্থলে ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, থানার এস আই মুজিবুর রহমান, কস্টেবল তারেক, ওয়াছিন, ফারুখ। প্রবাসী পরিবার ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করার ৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোন আসামী গ্রেফতার না করার ফলে চরম নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি উল্লেখ করেন তিনি। সন্ত্রাসীদের অব্যাহত হামলায় বর্তমানে তার পরিবার বাড়ি ছাড়া রয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পরিবারের নিরাপত্তাসহ তার মালিকাধীন জায়গা ও হামলাকরীদের গ্রেফতারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আব্দুল হক ছানু মিয়ার চাচাত ভাই রুহেল মিয়া, স্ত্রী রেহানা পারভীন, ছেলে নাজমুল হক প্রমুখ।
তবে সার্বিক বিষয়ে অভিযুক্ত আকাইদ মিয়া বলেন, মসজিদের জায়গা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রবাসী আব্দুল হক ছানু মিয়া ও লোকমান মিয়ার সাথে গ্রামবাসীর বিরোধ রয়েছে। তারা মসজিদের উন্নয়নে বাধা প্রদান করে থাকেন। ঘটনার সময় ডাকাত ঢুকেছে বলে মাকিং শুনে গ্রামবাসী একত্রিত হলে প্রবাসীদের লালিত বাহিনী গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালায়। আমরা তাদের উপর কোন অক্রমন করিনি। পুলিশকে ম্যানেজ করে সাজানো মামলা দিয়ে গ্রামের নিরিহ মানুষদের হয়রানি করার অভিযোগ করেন তিনি।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোনায়েম মিয়া বলেন, জরুরী পুলিশি সেবা ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে জুনাইদ বাহিনী পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় চার পুলিশ আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ১ মার্চ ২২ জনের নাম উল্যেখ সহ অজ্ঞাত ১০০/১৫০ জনকে আসামী করে থানায় পুলিশ এ্যাসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-১। পুলিশ অভিযান চালিয়ে জুনাইদ পক্ষের লোকজনের বাড়ি থেকে বিপুল পরিমান দেশীয় অন্ত্র উদ্ধার করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। প্রবাসীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি আমাদের জানাননি। লিখিত ভাবে জানানে তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে।