সিলেটের বিশ্বনাথে স্ত্রীর জানাযা নামাজের প্রায় ১০ মিনিট পূর্বে মারা গেছেন স্বামী। আজ রোববার পৌর শহরের ইলামেরগাঁও (আটঘর) গ্রামে মর্মান্তিক ও ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের ঘটনাটি ঘটে। একই সাথে পরপারে পাড়ি দেওয়ার মধ্য দিয়ে ‘স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে থাকা ভালাবাসার চিরন্তন বন্ধনের ঘটনাটি যুগ যুগ ধরে আরোও অনেকের কাছে একটি স্মরণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে। যদিও শোকাহত পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি অনেক কষ্ঠদায়ক।
মরহুমদের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি )বিকেল ৫টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন পৌর শহরের ইলামেরগাঁও (আটঘর) গ্রামের হাজী জমসিদ আলীর স্ত্রী হাওয়ারুন নেছা (৮০)। গতকাল রোববার সকাল ১১টায় মরহুমার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় নির্ধারণ করেন পরিবার ও এলাকাবাসী। স্ত্রীর জানাযার নামাজের ঘন্টাখানেক পূর্বে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন হাজী জমসিদ আলী। তিনি অসুস্থ হওয়ার সাথে সাথে পরিবারের লোকজন তাঁকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসা গ্রহন শেষে হাওয়ারুন নেছার জানাযার নামাজের পূর্বেই তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু বিধিবাম, স্ত্রীর মৃত্যুর শোক যেনোও তিনি সইতে পারেননি। তাই হাজী জমসিদ আলী নিজ মুখেই সন্তানদের বলেন, তোমাদের মায়ের সাথে আমাকেও দাফন করও। যেই বলা, সেই কাজ যেনো বাস্তবে রুপ নিল। স্ত্রীর জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব মুহুর্তেই (১০/১৫ মিনিট) মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করেন হাজী জমসিদ আলী (১০৫)।
এদিকে হাওয়ারুন নেছার জানাযার নামাজ নির্ধারিত সময় অনুষ্ঠিত হলেও, হাজী জমসিদ আলীর জানাযার নামাজ রোববার বাদ আসর অনুষ্ঠিত হয়। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের মাতন চলছে। মৃত্যুর পূর্বে ওই দম্পত্তি ৬ পুত্র, ২ কন্যা, নাতী-নাতনীসহ অসংখ্য আতœীয়-স্বজন রেখে গেছেন।
মরহুম দম্পত্তির পূত্র আব্দুল আজিজ বলেন, আমাদের আম্মা (মাতা)’র মৃত্যুর পর গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় জানাযার নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়ে ছিল। এর ঘন্টাখানেক পূর্বে হঠাৎ আব্বা (পিতা) অসুস্থ হয়ে পড়লে, আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। চিকিৎসা গ্রহন শেষে বাড়িতে আসার পর আম্মার জানাযার নামাজে ১০/১৫ মিনিট পূর্বে আব্বাও মারা যান। এক সাথে আব্বা-আম্মার মৃত্যু আমাদের কাছে অনেক কষ্ঠদায়ক।