✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
সিলেট বিভাগ

সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

কুলাউড়ায় নাজমা বেগমের মৃত্যু নিয়ে ধুম্রজাল

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পুথিমপাশা ইউনিয়নে পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে নাজমা বেগম (৪০) নামক এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। নাজমার মৃত্যুর সাথে অভিযুক্ত সোহাগ মিয়া ও ফারুক মিয়ার কোন সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবী পরিবারের। 

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযুক্তদের উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষে সোহাগ মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী ডলি বেগম এবং তাদের মা আয়াতুন বেগমের জানান, নাজমা বেগমের মৃত্যুর ঘটনা পুরোটাই সাজানো নাটক। সোহাগ মিয়া কিংবা ফারুক মিয়া কেউই নাজমা বেগমকে মারপিট তো দূরের কথা স্পর্শও করেননি। নাজমা বেগম দীর্ঘদিন থেকেই নানাবিধ অসুখে ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি মারা গেছেন। পুলিশও সুরতহাল রিপোর্টে কোন আঘাতের চিহ্ন পায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই এর আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

জানা যায়, নাজমা বেগম ও তার বোন সুমেনা বেগম এবং বোন জামাই শফিক মিয়া স্থানীয়ভাবে দাদন (চড়াসুদ) কারবারী (ব্যবসায়ী)। ব্যবসার জন্য ওই চক্রের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ধার (কর্য্য) নেন সোহাগ। সেই টাকা চক্রবৃদ্ধি হারে ৭ লাখ টাকা হয়ে গেছে বলে দাবি করেন শফিক মিয়া। এ নিয়ে পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নবাব আলী নকী খানের মাধ্যমে বিচার করে ৮৫ হাজার টাকায় দেনা নিস্পত্তি হয় এবং সেই টাকা গ্রহণ করেন নাজমার স্বামী ফখরু মিয়া। কিন্তু গত ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শফিক মিয়ার নেতৃত্বে কয়েকজন সোহাগ মিয়ার দোকানে গিয়ে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা তাকে গুরুতর জখম করে এবং দোকানে ভাঙচুর চালায়। এঘটনায় সোহাগ মিয়া কুলাউড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এদিকে ১৮ জানুয়ারি সকালে অসুস্থ নাজমা বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নাজমা বেগমের ছেলে মুরাদ মিয়া বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় মামলা (নং-১৫, তারিখ ১৯/০১/২৫) দায়ের করেন। আর পূর্ববিরোধের প্রতিশোধ নিতে সেই মামলায় সোহাগ মিয়া ও ফারুক মিয়াকে আসামী করেন।

টাকার বিষয়ে সালিশকারী পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নবাব আলী নকী খান জানান, ৮৫ হাজার টাকা ধার্য্য করে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। ফরিদ মেম্বারের মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা নেন নাজমা বেগমের স্বামী ফখরু মিয়া। পরে বাকি ২৫ হাজার টাকাও পরিশোধ করেন সোহাগ মিয়া। কিন্তু টাকা নিয়েও সোহাগ মিয়ার দোকানে গিয়ে তার উপর হামলা চালানো নেহাত অন্যায়। নাজমা বেগম অসুস্থ ছিলেন, এই মারামারির ঘটনায় যে তার মৃত্যু হয়েছে- এটা সঠিক নয়। তদন্ত হলেই সত্যতা মিলবে।

এব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো: আব্দুল আলিম জানান, প্রাথমিক সুরহাল রিপোর্টে নাজমা বেগমের শরীরে আঘাত বা কোন কাটাছেড়ার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। যেহেতু নিহতের পরিবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, তাই মামলা নেওয়া হয়েছে।

এই সম্পর্কিত আরো