মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে একটি প্রভাবশালী মহলের বাঁধার কারণে যাতায়াতের রাস্তায় চলাচলে প্রতিবন্ধিকতা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় প্রশাসনের কাছে আবেদন নিবেদন করে কোন ফল না পাওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের নারায়নক্ষেত্র গ্রামের মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় কমলগঞ্জ সাংবাদিক সমিতির শমশেরনগরস্থ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের কাছে তিনি এ দাবী জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর কেয়ারটেকার সুরানন্দ কর বলেন, নারায়ণক্ষেত্র গ্রামের সুয়ের চৌধুরী ও মোঃ দিলাই মিয়া অন্যায়, অত্যাচারী, উশৃঙ্খল ও জবরদখলকারী প্রকৃতির লোক। সুয়েব চৌধুরী ইংল্যান্ড প্রবাসে থাকেন। আর দিলাই মিয়া উনার বাড়ি দেখাশুনা করেন। নারায়নক্ষেত্র গ্রামের চলাচলের অতি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দিয়ে মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ এলাকার প্রায় ২৫/৩০টি পরিবার প্রতিদিন চলাফেরা এবং কৃষি কাজে হাল-চাষ করতে ব্যবহার করেন।
সুয়েব চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে মো: দিলাই মিয়াকে দিয়ে ওই রাস্তায় প্রতিন্ধকতা সৃষ্টিসহ রাস্তা দখল করার চেষ্টায় লিপ্ত। রাস্তার শেষ সীমানায় আমার ধানে বিছরার সামনে সুয়েব চৌধুরীর লোকজন রাস্তায় বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে অবগত করি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সুনীল মালাকার ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখে সুয়েব চৌধুরীর আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলোচনা করলে তারা বিষয়টি দেখে মিমাংসা করে দিবেন বলে জানান। বিষয়টি সমাধানের আশায় অপেক্ষায় থাকাবস্থায় প্রভাবশালী সুয়েব চৌধুরীর পরামর্শে মো: দিলাই মিয়াকে বর্ণিত রাস্তার শেষ প্রান্তে মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর জায়গার সামনে পাকা দেয়াল নির্মাণ করতে থাকেন। এতে দিলাই মিয়াকে বাঁধা নিষেধ করলে তিনি তা অমান্য করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি পুনরায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ মেম্বার, চেয়ারম্যানকে অবগত করলে তারা বিষয়টি সমাধনের চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা তা অমান্য করে পাকা দেয়াল নির্মাণ করে রাস্তা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে রাস্তার উপর স্থায়ীভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একচালা টিনসেড ঘর নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন।
মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর কেয়ারটেকার সুরানন্দ কর বলেন, মজির উদ্দিন আহমদ চৌধুরী আর কোন উপায়ান্ত না পেয়ে গত ১ আগস্ট কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদেরকে নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেন।
থানার মাধ্যমে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে মুন্সিবাজার ইউপি কার্যালয়ে গণমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে সালিশ বসে। ওই সালিশে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অবৈধভাবে নির্মিত দেওয়ালটি অপসারন করে রাস্তায় চলাচলের প্রতিবন্ধকতা দূর করা ও উভয় পক্ষের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান সুয়েব চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপন করায় এখন পর্যন্ত যাতায়াতে চরম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী ওই দেয়াল অপসারন করা হয়নি এবং এখন পর্যন্ত যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ আছে। বরং গাছপালা লাগিয়ে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুয়েব চৌধুরীর প্রতিনিধি দিলাই মিয়ার সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কমলগঞ্জ সহকারী উপ পরিদর্শক আব্দুল হামিদ বলেন, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সমাধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। ইংল্যান্ড প্রবাসী সুয়েব চৌধুরী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে আসলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জাফর মো: মাহফুজুল কবির বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।