জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে আকরাম হত্যা মামলার প্রধান আসামী গ্রেফতার করেছে জামালগঞ্জ থানা পুলিশ।
বুধবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মোহাম্মদপুর নামক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামী জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম লক্ষিপুর গ্রামের আলী আহমদের ছেলে রিপন আহমদ (৩৪)।
গ্রেফতারের পর খুনের ঘটনা সত্যতা শিকার করে ঘাতক রিপন জানায়, সে মোহাম্মদপুর এলাকার ফারুক মিয়ার গেরেজ থেকে প্রতিদিন রিকশা ভাড়া নিয়ে শহরে যাত্রীসেবা দিতো। সে নিজের জন্য নতুন একটি অটো রিকশা ষাট হাজার টাকা দিয়ে ক্রয়ের জন্য দরদাম করেন। কিন্তু তার কাছে ৩৫ হাজার টাকা কম থাকায় সে রিকশাটি ক্রয় করতে পারছিলোনা। পরবর্তীতে সে রিকশাটি ক্রয়ের উদ্দেশ্যে ৩৫ হাজার টাকার ব্যবস্থা করার জন্য নিহত আকরাম হোসেনের রিকশা ছিনতাই করার পরিকল্পনা করেন। পরে নিহত আকরাম হোসেনকে প্রতি ঘন্টায় একশ টাকা ভাড়া দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সন্ধার দিকে সুনামগঞ্জ শহর থেকে রওয়ানা দিয়ে আকরাম হোসেনকে তার রিকশাসহ জামালগঞ্জ উপজেলায় নিয়ে যায় রিপন। জামালগঞ্জ যাওয়ার পর সেখান থেকে আবার ফেনারবাঁকের ইউনিয়নের নির্জন হাওরে যেতে বলে রিপন।
আকরাম হোসেন এত রাতে নির্জন স্থানে যাওয়ার বিষয় জানতে চাইলে রিপন জানায় আরেকটু সামনেই বাড়িঘর আছে। কোনো সমস্যা হবেনা। এভাবে একপর্যায়ে ফেনারবাঁকের রাঁজাপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের উড়ার বিলের কাছে গিয়ে আকরাম হোসেনকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে রিপন। এসময় দুজনের ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রিকশাটি ধান ক্ষেতে পড়ে যায়। তাৎক্ষণিক মুহুর্তে অপরদিক থেকে অন্য আরেকটি যাত্রীবাহী অটোরিকশা আসার লাইট দেখে রিকশা ও আহত অবস্থায় আকরাম হোসেনকে ফেলে দৌড়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে রিপন। ঘটনার পর সে রাতেই ঘাতক রিপন তার পশ্চিম লক্ষিপুর গ্রামের বাড়িতেই অবস্থান করেছিল। পরের দিন সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার ঢাকা দক্ষিণ এলাকায় তার বড় ভাইয়ের কাছে গিয়ে নিহত আকরাম হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি তার বড় ভাইয়ের কাছে রেখে তার ভাইয়ের ব্যবহৃহ মোবাইল সেটটি নিয়ে রিপন পূনরায় সুনামগঞ্জ মোহাম্মদপুর এলাকায় চলে আসে। গ্রেফতারের পর এরকম চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে। রিপনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ঘটনাস্থল ও নিহত আকরাম হোসেনের ব্যবহৃিত মোবাইলটি গোলাপগঞ্জ তার ভাইয়ের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত আকরাম হোসেনের পিতা ও মামলার বাদী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, আমার ছেলের খুনিকে দ্রুত গ্রেফতার করায় জামালগঞ্জ থানা পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এসময় খুনি রিপন মিয়ার ফাঁসির দাবি করেন তিনি।
এব্যাপারে জামালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ.ম কামাল হোসেইন জানান, ঘটনার তিন দিনের মধ্যেই আমরা আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। আগামীকাল সকালে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। এব্যাপারে জামালগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছিলো।