সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক হত্যা মামলায় নিহতের ছেলে আসাদ আহমদকে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক শরিফুল হক রিমান্ড শুনানির পর এ আদেশ দেন। আদালত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার উপস্থিতি সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে রিমান্ড শুনানী হয় শুনানী শেষে আদালতের বিচারক শরিফুল হক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আদালত সূত্র নিশ্চিত করে।
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, রিমান্ডে আসাদ একেকসময় একেক কথা বলছে। তাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে তাকে আবারও রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডের রহস্য্ উদঘাটন না হওয়ায় প্রথম দফা রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। পরে একই আদালতে পূনরায় ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, প্রথম দফায় তিন দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে আসাদ একেক সময় একেক ধরনের তথ্য দিয়েছেন। হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় তাকে ফের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়। এ জন্য দ্বিতীয় দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলেও আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বুধবার (১২ নভেম্বর) সকালে সিলেট কারাগার থেকে আসাদকে হেফাজতে নিয়ে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে দক্ষিণ সুরমার নিজ বাড়ি থেকে আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রাজ্জাকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বুক, পেট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাতের গভীর চিহ্ন পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ ২২ ইঞ্চি লম্বা একটি ছুরিও উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে লাশ উদ্ধারের আগ পর্যন্ত কেউ ওই বাসায় ঢোকেনি বা বের হননি। শুধু সকাল আটটার দিকে গৃহকর্মী বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ির ঘরে রাজ্জাকের মরদেহ দেখতে পান। তখন ঘরের দরজা ভেতর থেকে তালাবদ্ধ ছিল, আর সেই চাবি ছিল নিহতের কাছেই।
পারিবারিক সূত্র বলছে, আবদুর রাজ্জাকের এক ছেলে ও এক মেয়ে—দুজনেরই বিয়ে হয়েছে। মাস দুই আগে তিনি সম্পত্তি ভাগ করে দেন এবং এরপর থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ভারতও গিয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা থাকলেও তিনি নিজ বাড়িতেই থাকতেন।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা না করায় দক্ষিণ সুরমা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনোয়ারুল কামাল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ না থাকলেও পরিবারের কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হত্যার নেপথ্যে পারিবারিক বিরোধ নাকি অন্য কোনো কারণ—এ নিয়েই এখন তদন্ত এগিয়ে নিচ্ছে পুলিশ।