সুনামগঞ্জের ধান ও চালে আর্সেনিকের উপস্থিতি মানবদেহে সহনীয় মাত্রার তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অবহিতকরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলায় বেশি উৎপাদিত ধানে আর্সেনিকের উপস্থিতি পরীক্ষার জন্য ঢাকার ল্যাবে চারটি ধানের নমুনা পাঠানো হয়। এর প্রেক্ষিতে যে রিপোর্ট পেয়েছি, সেটি খুবই আশাব্যঞ্জক। সাধারণত আমরা যেসব চাল খাই তাতে আর্সেনিকের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক থাকলেও আমাদের পাঠানো নমুনায় মানবদেহের সহ্যক্ষমতার অনেক নিচে রয়েছে আর্সেনিকের উপস্থিতি।
তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ জেলার ধান-চাল খুব ভাল, এটা যদি প্রতিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে এই জেলার ধান-চালের বিক্রয়মূল্য অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি হবে।
এতে করে কৃষক উপকৃত হবেন। নাটোরের কাঁচাগোল্লা কিংবা রাজশাহীর আমের মতো সুনামগঞ্জের ধান-চালেরও আলাদা চাহিদা তৈরি হবে ভোক্তাদের মাঝে। ফলে ধান-চালকে কেন্দ্র করে অনলাইন ব্যবসার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
সভায় নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, জেলা প্রশাসকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে ধান-চালে আর্সেনিকের উপস্থিতি পরীক্ষার জন্য আমরা চারটি জাতের ধানের চাল ল্যাবে পাঠাই, সেগুলো হলো- পাইজাম, ব্রি-৮৮, ব্রি-৩২ ও ব্রি-৫০।
এর মধ্যে পাইজামের চালে দশমিক ১৬৫ পিপিএম, ব্রি-৮৮ এর চালে দশমিক ০৬৭ পপিএম এবং ব্রি-৩১ এর চালে দশমিক ১২৩ পপিএম মাত্রায় আর্সেনিকের উপস্থিতি রয়েছে, যা মানবদেহের সহ্যক্ষমতার অনকে নিচে। মানদেহের আর্সেনিকের সহ্যক্ষমতা দশমিক ২ বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, ব্রি-৫৫ জাতের ধানের চালের পরীক্ষার ফলাফল এখানো আসেনি। তবে আশা করা হচ্ছে এটিতেও আর্সেনিকের মাত্রা সহ্যক্ষমতার নিচে থাকবে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি চাঁদপুর জেলার দুটি উপজেলা থেকে সংগৃহীত চল ও সবজিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি পরীক্ষা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক।
এতে উঠে আসে, ওই এলাকার উৎপাদিত চাল ও সবজিতে আর্সেনিকের মাত্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত নিরাপদ মাত্র থেকে বহুগুণ বেশি। ওই গবেষণায় প্রতি কেজি চালে আর্সেনিকের উপস্থিতি সনাক্ত হয় দশমিক ৯১ মিলিগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিরাপদ সীমার (০.৩৭ মিলিগ্রাম/কেজি) দ্বিগুণেরও বেশি।