প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শারমিন জাহান এই আদেশ দেন।
মামলার বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এটিএম শাহ আলম চাকরি করাকালীন সময়ে তার শিক্ষা সনদ ও এনআইডি থেকে ১৯৬১ সালের স্থলে পরিবর্তন করে ১৯৬২ সালে তার জন্ম বলে নিজের বয়স বলে চালিয়ে দেন। বয়স প্রতারণা অনুযায়ী তিনি ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর অবসরে (পিআরএর) যান। এ সময় তিনি চাকুরির অবসরকালীন সময়ে প্রতারণা করে অতিরিক্ত আরো এক বছর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড থেকে অনৈতিকভাবে ৭৪ লাখ ৪ হাজারের বেশি টাকা বেতন ভাতা হিসেবে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
তার এই প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসলে, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই তদন্ত কমিটি সনদ জালিয়াতির বিষয়ে প্রমাণ পেয়ে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড-এর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। পরে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের ৭১৭তম বোর্ড সভায় এটিএম শাহ আলমের জালিয়াতির বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
একই সাথে তার প্রতারণায় সহযোগিতা করায়, তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক নূরুল আবছার ও তৎকালীন জিএম (প্রশাসন) মো. নাসিবুজ্জামান তালুকদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের তৎকালীন উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল বাসার মিজি বাদী হয়ে ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পরই প্রধান আসামি এটিএম শাহ আলম দেশ ত্যাগ করেন। মামলার অপর দুই আসামি তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক নূরুল আবছার ও তৎকালীন জিএম (প্রশাসন) মো. নাসিবুজ্জামান তালুকদার উচ্চ আদালত থেকে জামিন আনেন।
সোমবার তারা নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাহবুবুর রহমান জানান, আদালত শুনানি শেষে তাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য অপরাধের ধারা থাকায় দু’জনকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।