সিলেটের সীমান্ত জনপদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল — কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। অথচ চিকিৎসা নয়, এই প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি এখন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও নোংরার দুর্গন্ধে। চিকিৎসাসেবা নিতে এসে রোগী ও স্বজনদের পড়তে হচ্ছে নানামুখী দুর্ভোগে।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের শৌচাগারগুলোর অবস্থা বেহাল— নোংরা, পিচ্ছিল ও দুর্গন্ধময়। রোগীদের জন্য নির্ধারিত টয়লেটে ঢোকাই দায়।
স্থানীয় বাসিন্দা বিলাল আহমদ বলেন, “রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসে, কিন্তু এমন নোংরা পরিবেশে সুস্থ হওয়ার বদলে আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”
তিনি আরও জানান, “আমি আমার ছোট শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। শৌচাগারে গেলে দেখি অসহনীয় দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশ। কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতি নজিরবিহীন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি, দায়িত্বে অবহেলা ও অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে এ অবস্থা। নিয়মিত মাত্র কয়েকজন কর্মচারী থাকেন; ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের দেখা মেলে না প্রায়ই। ফলে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
২০১৯ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে নতুন ভবন নির্মাণ হলেও জনবল সংকট, ডাক্তার ও নার্সের অভাব এখনো কাটেনি। প্যাথলজি ও ল্যাব সেবা কার্যত অচল অবস্থায়।
উপজেলার দুই লাখ মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নয়, বরং অব্যবস্থাপনাই এখন সবচেয়ে বড় রোগে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান নয়ন বলেন, “ভাইরাল ভিডিওর বিষয়টি আমরা জানি না। অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন জনবল এখনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি।”
কোম্পানীগঞ্জ নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিন মিয়া বলেন, কিছুটা অভিযোগের খবর পেয়ে সম্প্রতি পরিদর্শন করেছি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক প্রধান এ বিষয়ে আন্তরিক তবে জনবল সংকট থাকার কারণে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে।