সুনামগঞ্জের পাঁচটি আসনের ১১ মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকেল পৌনে ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি হয়।
বৈঠক শুরুর আগে বিএনপি মহাসচিবের ব্যক্তিগত সহকারী সুনামগঞ্জের ১১ নেতাকে ডেকে নিয়ে যান। এ সময় ওই ১১ জনের বাইরে অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলে হট্টগোল শুরু হয়। সেখানে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা এ ঘটনার ভিডিও করতে গেলে তাদের ওপর গুলশান কার্যালয়ের কর্মচারী সাইফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন চড়াও হন। এ সময় আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিক জাহিদ হোসেনকে লাঞ্ছিত করে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করেন।
ঘটনাস্থলে ক্ষুব্ধ নেতারা বলেন, দুর্দিনে দলের পতাকা হাতে নিয়ে সংগ্রাম করেছি, এখন মধু গিলতে এসেছে অন্যরা। তারা অভিযোগ করেন, সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতা সিদ্দিকী ও কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন প্রত্যেক আসনে ভাগবাটোয়ারা করে পছন্দের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তালিকা করে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তারা বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলেন না, গত বছর ৫ আগস্টের পর যারা বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন, তাদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সভা শুরু হওয়ার আগে সুনামগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নাদীর আহমদ, ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেন, এম এ কাহার, এম এ সাত্তার; সুনামগঞ্জ-৪ আসনে আবুল মুনসুর শওকত, ব্যারিস্টার আবিদুর রহমান; সুনামগঞ্জ-১ আসনে মাহবুবুর রহমান, মোতালেব খানসহ ১৫ জনের মতো নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ জন্য তারা দলের জেলা ও বিভাগের তিন দায়িত্বশীল নেতাকে দোষারোপ করেন।
জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি নাদীর আহমদ বলেন, সুনামগঞ্জ বিএনপির আহ্বায়ক, স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দলের ত্যাগীদের অবজ্ঞা করেছেন। দলীয় মহাসচিব আমাদের জানিয়েছেন, তালিকা সংক্ষিপ্ত করার জন্য তিনি কাউকে দায়িত্ব দেননি। তিনি আমাদের মাঠে কাজ করার জন্য নির্দেশনাও দিয়েছেন। জানিয়েছেন, কোথাও কাউকে একক প্রার্থী হিসেবে ডাকা হয়নি; নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য আবদুল হক বলেন, আমাদের দোষারোপ করা অনুচিত হবে। আমরা শুধু কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালন করেছি।
বিকেল সোয়া ৩টায় সভার শুরুতেই ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১১ জনের উদ্দেশে দলীয় নির্দেশনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আপনারা যারা এসেছেন, তাদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রতি আসনে একজনকে দেওয়া হবে। সংসদ সদস্য ছাড়াও আপনাদের দায়িত্ব দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আছে। মনোনয়ন যারা পাবেন না, তাদের সেখানে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। এই সভা থেকে ফিরে আপনারা শুধু ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা চালাবেন। প্রচারণায় কেউ কারও সমালোচনা করে কথা বলবেন না। দল যাঁকে মনোনয়ন দেবে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁর পক্ষে থাকতে হবে। পরে একজন করে মনোনয়নপ্রত্যাশীর বক্তব্য শোনেন তিনি।