 
    
    
 
        
        এবার এইচএসসি'র ফলফলে বিপর্যয় ঘটেছে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে। বৃহস্পিতবার প্রকাশিত ফলাফলে পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ যা গতবছরের তুলনায় কমেছে ৩৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
একই সাথে কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন শিক্ষার্থী যা গত বছরের তুলনায় কমেছে ৫ হাজার ৯৬টি।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে গত ৫ বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে খারাপ ফল।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডে এবার ৬৯ হাজার ১৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৫৮৭১ জন। পাসের হার ৫১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬০২ জন। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। সেবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৬ হাজার ৬৯৮ জন।
শিক্ষাবোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এবারই পুর্ণাঙ্গ সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। তাছাড়া ইংরেজীতে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করায় ফলাফলে বিপর্যয় হয়েছে। এছাড়া ক্লাসে অনুপস্থিতি ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে দক্ষ শিক্ষকের অভাবও ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় সিলেটে শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশ করেন বোর্ডের চেযারম্যান প্রফেসর মো.আনোয়ার হোসেন চৌধুরী।
এসময় সিলেটে শিক্ষাবোর্ডের চেযারম্যান মো.আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন,ইংরেজীতে এবার ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। এছাড়া পরিসংখ্যানেও ২৩ দশমিক ২২ শতাংশ, পদার্থ বিজ্ঞানে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ,একাউন্টিংয়ে ৩১ দশমিক ৮৯ শতাংশ,উচ্চতর গণিতে ২০ দশমিক ৯৮ শতাংশ, ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিষয়ে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ ও ইতিহাস বিষেয়ে ১৮ দশমিক ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করায় পাসের হার কমেছে। তবে সার্বিক ফলাফল ভাল হয়েছে। কারন এবার সারাদেশেই গড় পাশের হার কম। ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট।
তিনি বলেন,জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত না হওয়া ও দুর্গম হাওরাঞ্চল ও গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি ও বিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ে মান সম্পন্ন শিক্ষক না থাকায়ও সার্বিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চার জেলা থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নেয় ৬৯ হাজার ১৭১ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ৩৫৮৭১ জন।
ভাল ফল সিলেট জেলায়
সিলেট বোর্ডের অধীনে চার জেলায় মধ্যে সিলেট জেলার শিক্ষার্থীরা ভাল ফল করেছে। এ জেলায় পাসের হার ৬০ দশমিক ৬১ শতাংশ। এর পরের অবস্থানে থাকা হবিগঞ্জে ৪৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এছাড়া সুনামগঞ্জে ৪৭ দশমিক ৩৫ ও মৌলভীবাজারে পাসের হারা ৪৫ দশমিক ৮০ শতাংশ।
ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে মেয়েরা
এইচএসসির ফলাফলে ছেলেদের চেয়ে ভাল ফল করে অধিপত্য ধরে রেখেছে মেয়েরা। ৪১ হাজার ৪০৭ জন মেয়ে পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২২ হাজার ০১ জন। মেয়েদের পাসের হার ৫৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে ২৭ হাজার ৭৬৪ জন ছেলে পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ১৩ হাজার ৮৭০ জন। ছেলেদের পাসের হার ৪৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বিজ্ঞানে বিভাগের ভাল ফল
সিলেটে বোর্ডে এবার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভাল ফল করেছে। এ বিভাগে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৫০ দশমিক ১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ৪৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ । বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৭৯ টি। ১৫৩ টি জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আর ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭০ জন।
শতভাগ পাস ৩ কলেজে, কেউ পাশ করেনি ৪ কলেজে
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারের পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৩২৩ টি কলেজের মধ্যে মধ্যে ৩টি কলেজ শতভাগ পাসের গৌরব অর্জন করেছে। আর কেউ উত্তীর্ণ হতে পারেননি চারটি প্রতিষ্ঠানে।
কোন গ্রেডে কতজন উত্তীর্ণ
মোট উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জিপিএ পাঁচ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ হাজার ৬০২ জন। এছাড়া এ গ্রেডে ৬৬ হাজার ৭২ জন, এ মাইনাস গ্রেডে ৮ হাজার ২২ জন, বি গ্রেডে ৯ হাজার ৩৭০ জন, সি গ্রেডে ৯ হাজার ৫৬১ জন ও ডি গ্রেডে ৬৪৪ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ফল বিপর্যয়:কমেছে পাসের হার ও জিপিএ-৫