বাংলাদেশ দলের ফিল্ডিং কোচ জেমস প্যামেন্ট খেপে গেলেন ফিল্ডারদের ওপর। কাল সন্ধ্যায় ফিল্ডিং অনুশীলনে যেভাবে মিস করছিলেন শরীফুল-মেহেদীরা, চিৎকার করে বোঝাতে থাকলেন—কিছুতেই এই ভুল করা যাবে না। তবু ভুল হতে থাকল বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে। অনুশীলনের ভুল মার্জনীয়। যদি আজ আবুধাবিতে আফগানদের বিপক্ষে ভুলের পুনরাবৃত্তি করে বসেন লিটনরা, তাহলে এবারও এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকেই বাংলাদেশের বিদায়।
২০২২ এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে লো স্কোরিং ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদশ। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচটির স্মৃতিও সজীব। সেন্ট ভিনসেন্টে আফগানদের বিপক্ষে যে ম্যাচটা জিতলে বাংলাদেশ চলে যায় সেমিফাইনালে, সেটি পারেননি সাকিব-শান্তরা।
খেলা যখন ২০ ওভারের, আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটু যেন পিছিয়ে থাকে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচ মরুতে, আারব আমিরাতের কন্ডিশন হাতের তালুর মতো চেনা রশিদ-নবিদের। এটা যে তাঁদের ‘সেকেন্ড হোম।
আফগানদের দ্বিতীয় বাড়িতে বাংলাদেশ খেলতে নামছে কঠিন এক সমীকরণ নিয়ে। হারলেই সুপার ফোরের আগে বিদায় বাংলাদেশের। জিতলেও যে সুপার ফোর নিশ্চিত, তা নয়। পরশু আবুধাবিতে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে লিটনদের। পরের কথা পরে, আগে তো জিততে হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।
কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও দলের স্পিন পরামর্শক মুশতাক আহমেদ বিশ্বাস হারাতে চান না। তিনি চান, তাঁর শিষ্যরা এটা বিশ্বাস করুন, তাঁরা পারবেন। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটারদের যে সামর্থ্য আর সক্ষমতা, তাতে বড় কিছু অর্জন করবেন তাঁরা, আগে থেকে বিলিভ করা কঠিনই। এশিয়া কাপের আগে বাংলাদেশ দল টানা এক মাস প্রস্তুতি নিয়েছে। একজন পাওয়ার হিটিং কোচের কাছে বিশেষ দীক্ষা নিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই পাওয়ার হিটিংয়ের নমুনা দেখা গেল না। গত দুই ম্যাচে বাংলাদেশ মারতে পেরেছে মোটে ৩ ছক্কা।
উইকেটে গেলে যে টি-টোয়েন্টির চরিত্র বুঝে ‘আমরাও পারি বিগ হিটিং, সেই বিশ্বাস দেখা যাচ্ছে কোথায়? দলের প্রতিনিধি হয়ে কাল আবুধাবিতে সংবাদ সম্মেলনে আসা মুশতাক বলছিলেন, ‘আমরা এখন যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, আমাদের কন্ডিশন ও পরিস্থিতি বুঝতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে বোর্ডে এমন রান তুলতে হবে, যেটা নিয়ে আপনার বোলার লড়াই করতে পারবে। আমাদের যে বোলিং বিভাগ, ১৬০-১৭০ রান তুলতে পারলেই তাদের পক্ষে সম্ভব দলকে জেতানো।
আবুধাবির কন্ডিশনে এই ১৬০-১৭০ রান তুলতে পারছে না বাংলাদেশের ব্যাটিং বিভাগ। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মুহূর্তেই যেভাবে বাংলাদেশের দুই ওপেনার উধাও হয়ে গেছেন, আজ সেটার পুনরাবৃত্তি হলে বিদায়ঘণ্টা বেজে যাবে নিশ্চিত। বাঁচা-মরার ম্যাচে ব্যাটিং, স্পিন ও পেস তিন বিভাগে পরিবর্তন আনার ইঙ্গিত মিলেছে। ২০ ওভারের ক্রিকেটে দুই দলের ১২ সাক্ষাতে ৭টিতেই জিতেছে আফগানিস্তান। আজও এগিয়ে থেকে খেলতে নামবে তারা। প্রতিপক্ষের শক্তি, অভিজ্ঞতা, মাঠ সব যদি প্রতিকূলে থাকে, জিততে হলে বাংলাদেশকে একটা জায়গায় অটুট থাকতে হবে; মুশতাকের ভাষায়, বিলিভ বা বিশ্বাস।