প্রতিশোধ, মধুর প্রতিশোধ হয়তো একেই বলে! ম্যাচশেষে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন ভারতীয় ফুটবলাররা। অথচ সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা আগেই নিশ্চিত করেছে ভারত। দিনটি তাদের জন্য হওয়ার কথা ছিল উৎসবের। তাতে পানি ঢেলে দিয়েছেন প্রীতি-আলপিরা। ৭ গোলের থ্রিলারে ভারতকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
ভুটানের চ্যাংলিমিথান স্টেডিয়ামে প্রথম দেখায় ভারতের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। আজ রোববার একই ভেন্যুতে মাহবুবুর রহমান লিটুর দল মাঠে নামে প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে। রেফারি বাঁশি বাজানোর পর থিতু হওয়ার আগেই দেখা মেলে গোলের। ২৯ সেকেন্ডে মামোনি চাকমার ক্রস থেকে হেডে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন পূর্ণিমা মারমা। সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি ভারত। বাংলাদেশের রক্ষণের ভুলের সুযোগ নিয়ে ৯ মিনিটে ব্যবধান ১-১ করেন আনুশকা কুমারী।
৩৪ মিনিটে বাংলাদেশকে ফের এগিয়ে দেন আলপি আক্তার। পূর্ণিমার শট ভারতীয় গোলরক্ষক বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বলে সুরভী আকন্দ প্রীতির নেওয়া শট ভারতীয় এক ডিফেন্ডারে গায়ে লেগে চলে যায় পেছনে থাকা আলপির কাছে। আলতো ছোঁয়ায় আলপি সহজেই খুঁজে নেন জাল।
প্রথমার্ধজুড়ে দাপট বেশি ছিল ভারতের। যোগ করা সময়ে গোলবার বাধা হয়ে না দাঁড়ালে হয়তো সমতায় থেকে বিরতিতে যেত তারা।
বিরতি থেকে ফিরে এসে ৪৮ মিনিটে ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশ। মামোনি চাকমার বাড়ানো ক্রস দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন প্রীতি। ভারতীয় গোলরক্ষককে পরাস্ত করে দলের তৃতীয় গোল এনে দেন এ ফরোয়ার্ড।
৬৫ মিনিটে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত। বক্সের বাইরে থেকে দারুণ ভলিতে ব্যবধান কমান প্রীতিকা বর্মণী। ৮৯ মিনিটে সমতাও ফেরায় চ্যাম্পিয়নরা। বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে জাল খুঁজে নেন ঝুলান নংমাইথেম। বাংলাদেশ গোলরক্ষক মেঘলা রানী রায় পোস্ট ছেড়ে অনেকটা এগিয়ে থাকায় তা ঠেকানোর কোনো সুযোগ পাননি।
ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছিল ম্যাচ। বাংলাদেশের ফুটবলারদের দেখেও মনে হচ্ছিল, হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে হঠাৎই বদলে গেল ম্যাচের মোড়। রেয়ার পাস থেকে ডান দিক থেকে ছুটতে থাকেন প্রীতি। তাঁর শট ভারতীয় গোলরক্ষক মুন্নি ঠেকিয়ে দিলেও বল ডিফেন্ডার দিব্যানি লিন্ডার গায়ে লেগে আশ্রয় নেয় জালে। আত্মঘাতী এ গোলে ভর করে রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। আর শিরোপা নিয়ে উল্লাসের দিনেও হতাশায় চোখের পানি ঝরে পড়ে ভারতীয় ফুটবলারদের।