মিনিট দশেকের সংবাদ সম্মেলনে এশিয়া কাপের প্রস্তুতির প্রসঙ্গটিই ঘুরেফিরে এল বারবার। তা না এসে উপায়ই–বা কী—নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজটা তো হচ্ছে বড় টুর্নামেন্টের আগে যতটা সম্ভব সেরা প্রস্তুতির জন্যই। এ বাস্তবতা কারও অজানাও নয়।
কিন্তু একই সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে খেলায় একটা ঝুঁকিও থাকে। জিতে গেলে তেমন কৃতিত্ব নেই, হেরে গেলে বিদ্ধ হতে হবে সমালোচনার তিরে—তুলনামূলক খর্বশক্তির দলগুলোর বিপক্ষে খেললে যে চ্যালেঞ্জ থাকে অবধারিতভাবেই। এশিয়া কাপের আগে ডাচদের কাছে হেরে যাওয়া তাই হতে পারে বিরাট একটা মানসিক ধাক্কাও। তবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক লিটন দাস আগেভাগেই সতর্ক।
আজ সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে লিটন বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোনো ছোট দল নেই। আমরা সব সময় খেলি জেতার জন্য। অতীতে বা ভবিষ্যতেও যতগুলো ম্যাচ খেলব, সব জেতার জন্যই। বাংলাদেশ এর আগেও অনেক দলের কাছে হেরেছে, নতুন কিছু নয়। যদি হেরেও যাই, হেরে যেতেই পারি।’
দুই দলের মধ্যে একটিকে হারতে হবে, সব ম্যাচেই এটা জানা কথা। প্রতিপক্ষের জন্য সমীহ রেখেই লিটনের মূল চাওয়া আসলে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ভালো ক্রিকেট খেলা। আগের ৫ দেখায় ৪ জয় থাকলেও বাংলাদেশ অধিনায়ক তাই উইকেটের কারণে কিছুটা সতর্কই, ‘হয়তো নেদারল্যান্ডস এই কন্ডিশনে খুব একটা খেলে না, কিন্তু যদি ভালো উইকেটে খেলা হয়—তারা ভালো উইকেটে ক্রিকেট খেলে অভ্যস্ত। তাই চ্যালেঞ্জ থাকবেই।’
লিটন যত যা-ই বলুন, এই সিরিজ শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপ প্রস্তুতিরই একটা মঞ্চ বাংলাদেশের জন্য। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে তিন বছর পর নুরুল হাসান আর দুই বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন সাইফ হাসান। এ ছাড়া নিয়মিত একাদশের বাইরের ক্রিকেটারদের পরীক্ষার একটা মঞ্চ হিসেবেও কি নেদারল্যান্ডস সিরিজকে কাজে লাগাবে বাংলাদেশ?
লিটনের উত্তর, ‘অবশ্যই। যদি আমাদের হাতে ওই সুযোগ থাকে কিছু খেলোয়াড় দেখার, আমরা দেখব। কিন্তু একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনাকে জেতার জন্যই যেতে হবে।’
১০ দিন ধরে সিলেটেই প্রস্তুতি ক্যাম্প করছে বাংলাদেশ। মূলত এশিয়া কাপের উইকেট ও কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই ঢাকা থেকে তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে সিলেটে। এখানকার প্রস্তুতিতে খুশি লিটনও। আবুধাবিতে রান ওঠে, সে কথা মাথায় রেখে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের দু-আড়াই শ রানের জন্য ব্যাট করা বিষয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘আপনি যে কথাটা বললেন যে ২০০-২৫০ রান করাটা একটা অভ্যাসেরও বিষয়। আমরা যদি করতে পারি, খুবই ভালো। না করতে পারলেও আমরা ওই ধারাবাহিকতা চেষ্টা করব যে ওইখানে কীভাবে পৌঁছানো যায়।’
সিলেটের প্রস্তুতি আবুধাবিতে কাজে আসবে বলেও বিশ্বাস লিটনের, ‘এশিয়া কাপে যখন খেলব, ভিন্ন দল থাকবে। সেই দল তো আমরা এখানে আনতে পারব না। কিন্তু ওখানকার কাছাকাছি কন্ডিশন থাকবে, আমার কাছে মনে হয়। কারণ, আমরা সবাই জানি, আবুধাবি ব্যাটিং–সহায়ক উইকেট হয়। সিলেটও অনেকটাই ব্যাটিং–সহায়ক উইকেট।’
তিন টি–টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৩০ আগস্ট।