খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ সিলেট-৪ (গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ) আসনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া বইছে বেশ জোরেশোরে। এই আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে সক্রিয় থাকলেও, তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মুখে মুখে জনপ্রিয় নাম অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। ‘বিএনপির জামান’ হিসেবে পরিচিত এই হেভিওয়েট নেতাকে ঘিরে সিলেট-৪ আসনে এক নতুন নির্বাচনী সমীকরণ তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাজপথ থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গুলিবিদ্ধ হওয়া অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানকে ঘিরে গুঞ্জন রয়েছে যে তিনি খুব শিগগিরই দলে ফিরছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অ্যাডভোকেট জামানকে সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী চেয়ে সরগরম রেখেছেন ৩ উপজেলার বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। এই জনপদে তিন যুগ ধরে অ্যাডভোকেট জামানের বিচরণ। সেখানে রয়েছেন তাঁর বিশাল কর্মী বাহিনী ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর সমর্থন। তাই সীমান্তবর্তী এলাকা গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জের তৃণমূল নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অধীর আগ্রহে তাঁর অপেক্ষায় আছেন।
অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান দীর্ঘ তিন যুগ ধরে সীমান্তঘেঁষা এই তিন উপজেলার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছেন। আইনজীবী হিসেবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করে তিনি অগণিত মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। করোনাকালীন দুর্যোগ এবং বাইশের ভয়াবহ বন্যায় তাঁর ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের মানবিক সহায়তা কার্যক্রম মানুষের হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছে। স্থানীয় ভোটারদের মতে, জামান কেবল নির্বাচনের সময়ই নয়, বছরের পর বছর ধরে মানুষের পাশে আছেন, তাদের বিপদে সহযোগিতা করছেন এবং বিনামূল্যে আইনি সেবা দিচ্ছেন।
গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা একজন পরিচ্ছন্ন, শিক্ষিত ও পরোপকারী নেতা হিসেবে অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানকে দেখতে চান। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তাঁকে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিল তৃণমূল, কিন্তু প্রয়াত দিলদার হোসেন সেলিমকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও জামানকে প্রার্থী করার দাবিতে সোচ্চার সাধারণ মানুষ। তাদের মতে, জামান একজন ‘ডাইনামিক’ নেতা যার বিকল্প এই অঞ্চলে নেই।
সিলেট-৪ আসনে বর্তমানে একাধিক বিএনপি নেতা প্রচারণায় ব্যস্ত। তবে তৃণমূলের অভিযোগ, হেলাল উদ্দিন ও আবদুল হককে ‘অতিথি পাখি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ বিগত ১৭ বছর তারা কোনো আন্দোলন সংগ্রামে বা সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন না। সিলেট জেলা বিএনপি নেতা আবদুল হাকিম চৌধুরীর বিরুদ্ধেও আওয়ামী লীগের দোসর হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবেক সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী ও বিএনপি নেতা বদরুজ্জামান সেলিমের সাথেও তৃণমূল ও সাধারণ জনগণের সম্পর্ক ততটা গভীর নয়। তাছাড়া খেলাফত মজলিসের উলামা বিষয়ক সম্পাদক শায়খ আলী হাসান উসামা এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মনোনীত সংসদ পদপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলীও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।
এই পরিস্থিতিতে জামায়াতের একক প্রার্থী ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, জামায়াতকে পরাজিত করতে অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের মতো প্রার্থীর বিকল্প নেই। জামানকে ছাড়া অন্য কাউকে বিএনপি সিলেট-৪ আসনে প্রার্থী করলে জামায়াত জয়লাভ করবে বলে জামায়াতের একটি সূত্রও ইঙ্গিত দিয়েছে। কারণ একমাত্র জামানকেই তৃণমূলের ভোটাররা চেনে।
সীমান্তবর্তী এই তিন উপজেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা মনে করেন, এই অঞ্চলে বিএনপির রাজনীতির বীজ বপন করেছিলেন জামান এবং হাইকমান্ডের উচিত তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া। জৈন্তাপুর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা বিশ্বাস করেন, জামানের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণে তিনি প্রার্থী হলে জামায়াতের জয়নাল আবেদীন ফ্যাক্টর থাকবেন না।
সব মিলিয়ে, সিলেট-৪ আসনে অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামানের জনপ্রিয়তা এবং তৃণমূলের চাওয়া তাকে ঘিরে এক শক্তিশালী নির্বাচনী ঢেউ তৈরি করেছে। তাঁর মতো একজন জনবান্ধব নেতাকে মনোনয়ন দিলে বিএনপি এই আসনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে বলে সাধারণ ভোটারদের দৃঢ় বিশ্বাস।