সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় এখনও ব্যবহারোপযোগী একটি টেকসই ব্রিজ ভেঙে সরকারি অর্থায়নে নতুন আরেকটি ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসীর দাবি, উন্নয়নের নামে এটি সরকারি টাকা অপচয়ের একটি প্রকল্প এবং এর পেছনে রয়েছে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ও উপজেলা প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশ।
ঘটনাটি গোয়াইনঘাট উপজেলার ৬ নম্বর ফতেহপুর ইউনিয়নের গোসাইনপুর গ্রামের। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিএনপি সরকারের আমলে নির্মিত ব্রিজটি এখনও যথেষ্ট মজবুত ও চলাচলের উপযোগী। এমন একটি ব্রিজ ভেঙে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে আরেকটি ব্রিজ তৈরির কোনো প্রয়োজনীয়তা তারা দেখছেন না। তাদের মতে, এটি নিছক দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ লুটপাটের একটি পাঁয়তারা।
এলাকাবাসীর প্রশ্ন, যদি ব্রিজ বড় করাই উদ্দেশ্য হয়, তবে ইউনিয়নের সবগুলো পুরনো ব্রিজ ভেঙে বড় করা হচ্ছে না কেন? শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ব্রিজকে লক্ষ্য করে প্রকল্প গ্রহণ করায় তাদের মনে দুর্নীতির সন্দেহ দানা বেঁধেছে।
এই অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পটির বিষয়ে সম্প্রতি স্থানীয় একজন ছাত্রদল নেতা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি এটিকে '৫ আগস্টের আগের লুটপাটের প্রকল্প' হিসেবে আখ্যায়িত করলে স্থানীয় যুবলীগ নেতা তার ওপর ক্ষিপ্ত হন বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা-সমালোচনা। একজন গণমাধ্যমকর্মী তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গোয়াইনঘাটের ফতেপুর ইউনিয়নে চলাচলের উপযোগী ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও এই ব্রিজ নির্মাণ করে কাদের ফায়দা হাসিল হচ্ছে....?’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) হাসিব আহমেদ বলেন, ব্রিজটি বড় করার প্রয়োজনে পুরনো ব্রিজটি ভাঙা হচ্ছে।
তবে, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানিয়েছেন, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়েছেন এবং এ নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
একটি টেকসই স্থাপনা ভেঙে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে সরকারি অর্থের এমন অপচয়ের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না স্থানীয় সচেতন মহল। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।