শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫
শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
বিশেষ প্রতিবেদন

তিনি শুধু শীতকালেই আসেন

লন্ডন প্রবাসী জাকির হোসেন (৬০)। দুই এক বছর পরপর বাংলাদেশে আসেন। বেশির ভাগ সময় শীতকালে আসেন। দেশে আসার পর জাকির হোসেনের টার্গেট থাকে সিলেটের প্রত্যন্ত এলাকার নিরীহ-অসহায় পরিবারের সুন্দরী যুবতি মেয়েদের দিকে। প্রথমে তিনি ওই অসহায় পরিবারকে সাহায্য দেয়ার কথা বলে পরিবারের মানুষের আস্থা অর্জন করেন, পরে দালাল মারফত ওই পরিবারের সুন্দরী যুবতিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এবং লন্ডন প্রবাসী হওয়ার সুবাদে বিনা কাবিনে ওই পরিবারের সুন্দরী যুবতিকে জাকির বিয়ে করে নেয়। এভাবেই লন্ডন থেকে দেশে এসে নিজের হীন উদ্দেশ্যে চরিতার্থ করে সে। আর তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই ওই মেয়ের পরিবারের উপর নেমে আসে অত্যাচার-নির্যাতন। তার রয়েছে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সাথে সখ্যতা। শিবগঞ্জ সেনপাড়াস্থ তার বাসায় পুলিশের অনেক কর্মকর্তা আসা যাওয়া করেন। তাই কোনও নারী তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই তাকে থানা-পুলিশ দিয়ে দেওয়া হয় মামলা। এরকম অনেকে নারীই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে হামলা ও মামলার শিকার হয়েছেন। তার এসব অপকর্মের খবর তুলে ধরতে গিয়ে একাধিক সাংবাদিক ভুয়া মামলার শিকারও হয়েছেন। তাছাড়া জাকিরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হলেও তা ধামাচাপা পড়ে যায় টাকার বান্ডিলের নিচে। সিলেটের শিবগঞ্জ সেনপাড়াস্থ বাসায় অবাঞ্ছিত নারীদের নিয়ে ফুর্তি করার তার বিরুদ্ধে ৭ বছর আগে পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ দেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি এই জাকির হোসেন কর্তৃক প্রতারিত হয়ে মাকে নিয়ে সন্তানের স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন পুত্র রেদওয়ান হোসেন।


কথিত এই ‘বিয়ে কামলা’ লন্ডন প্রবাসী জাকির হোসেন বাড়ি বিয়ানীবাজারের দেউলগ্রাম। বর্তমানে সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার পুষ্পায়ন ৫৫নং বাসার বাসিন্দা।


সন্তানের স্বীকৃতি পেতে জাকিরের বিরুদ্ধে পুত্রের মামলা: লন্ডন প্রবাসী পিতা কর্তৃক প্রতারিত হয়ে মাকে নিয়ে বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক সন্তান। উক্ত লন্ডন প্রবাসী পিতা জাকির হোসেন (৬০) বিয়নীবাজারের দেউলগ্রামের মৃত মফুর আলীর ছেলে। প্রবাসী জাকির হোসেনর ঔরসজাত সন্তান রেদওয়ান হোসেনকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করায় বাধ্য হয়ে সন্তানের স্বীকৃতি পাওয়ার আশায় আদালতের স্মরণাপন্ন হয়েছেন।


সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে লন্ডন প্রবাসী জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে সিলেটের সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি স্বত্ত্ব মোকাদ্দমা (নং-২৯/২৫) মামলা দায়ের করেছেন শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার পুষ্পায়ন ৫৫নং বাসার বাসিন্দা রেদওয়ান হোসেন। 


মামলায় রেদওয়ান হোসেন উল্লেখ করেন, তিনি লন্ডন প্রবাসী জাকির হোসেনের ঔরসজাত পুত্র। ২০ বছর পূর্বে বাদি রেদওয়ানের মাতা আমিনা আক্তারের সাথে ৬ লাখ টাকা দেনমোহর সাব্যস্থ করে বিবাদী জাকির হোসেনের সাথে মুসলিম শরীয়াহ অনুযায়ী বিয়ে হয়। বিবাদী জাকির হোসেন বিবাহিত থাকায় আমিনা বেগমকে বিয়ের সময় কোনও রেজিষ্ট্রি কাবিন সম্পাদন করে দেননি। 


মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় বাদী রেদওয়ান হোসেনের মাতা যখন ৬ মাসের অন্তস্বত্ত্বা ছিলেন তখন তার পিতা জাকির হোসেন লন্ডন চলে যান। ২০০৬ সালে প্রবাসী জাকির হোসেনের ঔরসজাত সন্তান রেদওয়ান হোসেন জন্মগ্রহণ করেন।


তার বয়স যখন ৬ মাস তখন তার পিতা জাকির হোসেন লন্ডন থেকে দেশে আসেন। পিতা-মাতার সাথে সুখে শান্তিতে জীবন যাপন করে যাচ্ছিলেন রেদওয়ান। এরই মধ্যে রেদওয়ানের  পিতা মাতার মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হলে জাকির হোসেন তার ছেলে রেদওয়ান হোসেন ও স্ত্রী আমিনা আক্তারকে  অস্বীকার করে বাড়ি থেকে বের করে দেন এবং আমিনাকে তালাক প্রদান করেন। 


বাদী রেদওয়ান হোসেন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর তার মায়ের দুঃসহ জীবনের কাহিনী শুনে ২০২৪ সালের ১ নভেম্বর তার পিতা জাকির হোসনকে উপরোক্ত ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে এবং সন্তানের স্বীকৃতি দাবি করলে বিবাদী জাকির হোসেন তা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। 
রেদওয়ান হোসেন বিজ্ঞ আদালতের কাছে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন এবং জাকির হোসেনর ঔরসজাত পুত্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সুবিচার কামনা করেন।

এই সম্পর্কিত আরো