সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
রাজনীতি

জনপ্রিয়তা বাড়ছে এনসিপির, কমছে বিএনপি ও জামায়াতের: জরিপ

গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় বর্তমানে দেশের বড় দল বিএনপির জনপ্রিয়তা কমলেও বাড়ছে তরুণদের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জনপ্রিয়তা। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবরে বিএনপির জনপ্রিয়তা ছিল ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, গত জুলাইয়ে তা ১২ শতাংশে নেমেছে। জামায়াতের জনপ্রিয়তা ১১ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে ১০ দশমিক ৪ শতাংশে নেমেছে। এনসিপির জনপ্রিয়তা ২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে ‘কোন দলকে ভোট দেবেন’ জরিপের এমন প্রশ্নে এখনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার কথা জানিয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

আজ সোমবার আগারগাঁওয়ের জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘বিআইজিডি পালস সার্ভে’ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজন করে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও ভয়েস ফর রিফর্ম। ‘জনগণের মতামত, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা জুলাই ২০২৫’ শীর্ষক জরিপের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মদক্ষতা, জনগণের সংস্কার প্রত্যাশা এবং আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমর্থনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইজিডির ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর, বিআইজিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো মিরাজ এম হাসান ও আসিফ শাহান।

সারা দেশের ৬৪ জেলায় ৫ হাজার ৪৮৯ জন নারী ও পুরুষের মধ্যে টেলিফোনে এই জরিপ পরিচালিত হয়। চলতি বছরের ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়েছে।

জরিপের ফলাফলে বলা হয়, আগামী জাতীয় নির্বাচনে আপনি কাকে ভোট দেবেন—২০২৪ সালের অক্টোবরে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলেছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, তবে চলতি বছরের জুলাইয়ের জরিপে তা ৭ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। জাতীয় পার্টির প্রতি সমর্থন ২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশে নেমেছে। অন্যান্য ইসলামিক দলের সমর্থনও কমছে, ২ দশমিক ৬ শতাংশ থেকে কমে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। অন্যান্য দলের প্রতিও সমর্থন কমেছে জনগণের। আর কাকে ভোট দেবেন—এমন তথ্য জানাতে চাননি এই জরিপে অংশ নেওয়া ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ, যা গত অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। গত বছরের অক্টোবরে এনসিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ না করলেও প্রেশার গ্রুপ হিসেবে জাতীয় নাগরিক কমিটির ব্যানারে মাঠে ছিল।

জরিপে প্রশ্ন করা হয়, আপনার নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে বলে আপনার মনে হয়। এমন প্রশ্নের উত্তরে ৩৮ শতাংশ জানিয়েছে বিএনপির প্রার্থী, জামায়াতে ইসলামীর ১৩ শতাংশ, আওয়ামী লীগের ৭ শতাংশ, এনসিপি ১ শতাংশ এবং অন্যান্য দলের ৩ শতাংশ প্রার্থী জিতবে বলে জরিপে অংশগ্রহণকারীরা জানিয়েছেন এবং এই প্রশ্নের উত্তরে জানি না বলে উত্তর দিয়েছে ২৯ শতাংশ এবং প্রশ্নের উত্তর দেয়নি ৯ শতাংশ।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে বলে আশাবাদী ৭০ শতাংশ মানুষ। তাঁরা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে জানিয়েছে ১৫ শতাংশ। ৫১ শতাংশ মনে করে ভালোমতো সংস্কারের পরে নির্বাচন। কিছু জরুরি সংস্কার করে নির্বাচন চায় ১৭ শতাংশ। তবে জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হোক—এমন বিষয়ে মত দিয়েছে ৩২ শতাংশ। আর ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিষয়ে মত দিয়েছে ১২ শতাংশ, জুনের মধ্যে ১১ শতাংশ এবং ডিসেম্বর ২০২৬ অথবা এর পরে নির্বাচন হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে ২৫ শতাংশ।

জরিপের বিষয়ে সৈয়দা সেলিনা আজিজ বলেন, বর্তমানে সমস্যার ধরন বহুমাত্রিক এবং এই সমস্যায় অর্থনীতির একতরফা প্রভাব কমেছে। এই বহুমাত্রিকতার কেন্দ্রে রয়েছে রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা এবং এগুলোর মধ্যে প্রধান হচ্ছে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অস্থিতিশীলতা। এই কারণগুলোর জন্যই অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে।

তিনি বলেন, ‘মানুষ এই অস্থিতিশীলতার সমাধান খুঁজছেন দুভাবে, এক—নির্বাচন, দুই—সংস্কার। যদিও মানুষ নির্বাচনমুখী, তবু আমাদের ফলাফল অনুযায়ী একটি বিশাল গোষ্ঠী এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ভোটের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রার্থী মনোনয়ন বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।’

এই সম্পর্কিত আরো