মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে শান্তিগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা ‘আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক’ ফেসবুক পোস্টে বড় সংঘাত শেষ করলো নবীগঞ্জ প্রশাসন দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২৫ উদযাপন: মানসিক স্বাস্থ্য একটি মানবিক জরুরি অবস্থা হর্ন ব্যবহারে বিআরটিএ’র নির্দেশনা, নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা বানিয়াচংয়ে ছিন্নমুল ও অসহায় মানুষদের মাঝে ছাত্রদলের খাবার বিতরন ওসমানীনগরে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ মিছিল কুলাউড়ায় ৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন 'জুলাই যোদ্ধা' রানা
advertisement
রাজনীতি

জুলাইকে ‘মানি মেকিং মেশিনে’ পরিণত করা হয়েছে: উমামা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে থাকাটা তাঁর জীবনের একটা 'ট্র্যাজিক' ঘটনা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্ল্যাটফর্মটির সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমা৷

গতকাল রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে এসব কথা বলেছেন উমামা ফাতেমা৷ দুই ঘণ্টা ২৪ মিনিটের ওই লাইভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া থেকে শুরু করে বের হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নানা ঘটনা ও তথ্য তুলে ধরেন তিনি৷

উমামা ফাতেমা বলেছেন, 'জুলাই একটা অনেক বড় ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল৷ কিন্তু আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র হওয়ার পর প্রথম আবিষ্কার করেছি যে এগুলো দিয়ে লোকজন নানা কিছু করছে৷ আমার কখনো মাথায়ই আসেনি যে এগুলো দিয়ে টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায়৷ তাহলে হোয়াই ইন দ্য আর্থ এটাকে আমি একটা মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করতে যাব? কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয়েছে৷ খুবই কমন, খুবই রেগুলার বেসিসেই হয়েছে৷'


সমন্বয়ক পরিচয়টিকে নেতিবাচক কাজে ব্যবহার করাটা যে অভ্যুত্থানের পর পরই শুরু হয়েছিল, সেটিও উল্লেখ করেন উমামা৷ তিনি বলেন, '৫ আগস্টের পরদিন সকালবেলা থেকেই দেখি, সমন্বয়ক পরিচয়ে নাকি একেকজন একেক জায়গায় গিয়ে নাকি দখল করছে! আমি এক রকম অবাক হয়ে যাই যে গতকাল পর্যন্ত তো সমন্বয়ক পরিচয়টা দিতেই চাইছিল না আর আজকে থেকে শুনছি সবাই সমন্বয়ক এই পরিচয়ে চাঁদাবাজি-দখল চলছে৷...আমার মনে হচ্ছিল, এখন কি রক্ষীবাহিনীর মতো সমন্বয়কবাহিনী তৈরি হচ্ছে নাকি! সে সময় আমার মনে হয়েছিল, এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মটার আর দরকারটা কী, এখন তো সবাইকে অ্যাকোমোডেট করা নিয়ে ভাবা উচিত৷ আমার চিন্তা ছিল এই প্ল্যাটফর্মটাকে আরও ব্রড ও ডিসেন্ট্রালাইজ করে ফেলা উচিত৷ আমি মনে করি না, এটা ভুল চিন্তা ছিল৷ এই প্ল্যাটফর্মটা ওই সময় থেকে যাওয়ার অনেকগুলো ডিমেরিটস আমরা এখনো ভোগ করছি৷ কিন্তু ওই সময় এ কথাটা বলে আমি অনেক মানুষকে শত্রু বানিয়ে ফেলেছি৷'

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হওয়া

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় উমামা ফাতেমা ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব৷ অভ্যুত্থানের পর তিনি ছাত্র ফেডারেশন থেকে পদত্যাগ করেন৷ তখন থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন৷ পরে গত বছরের অক্টোবরে তাঁকে এই প্ল্যাটফর্মের মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়৷

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পর নিজের নানা তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে উমামা ফাতেমা বলেন, 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সবগুলো সিদ্ধান্ত হেয়ার রোডে (উপদেষ্টাদের বাসভবন) বসে ঠিক করা হতো সেগুলোই বাস্তবায়ন হতো' কান্নাজড়িত কণ্ঠে উমামা বলেন, আমি পুরো প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি বলে মনে হতো সবকিছু হিজিবিজি লাগত মাসের পর মাস স্ট্রেস ফুল অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি৷...বিষয়গুলো এত অদ্ভুত ছিল যে কোনো কিছুর কোনো ঠিক-ঠিকানা ছিল না৷ চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আসতো, একেকজনের বিরুদ্ধে যে স্বজনপ্রীতি ও শেল্টার-টেল্টার দেওয়ার যে অভিযোগ আসত, এগুলো আমি খুব ভালো করেই জানতাম শুধু চট্টগ্রামের কাহিনি সলভ করতে গেলে অনেকের প্যান্ট খুলে যেত এ রকম আরও অনেক জেলার কাহিনি আছে৷ এগুলো ধরতে গিয়ে দেখেছি, এগুলো তো অনেক দূর পর্যন্ত গড়িয়ে গেছে৷

৩১ ডিসেম্বর জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল, সেটাও হঠাৎ করেই জানানো হয়েছিল উল্লেখ করে উমামা ফাতেমা বলেন, পরে আর সেটা দেওয়া হয়নি৷ এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে আমি খুব বিরক্ত ছিলাম৷ জানুয়ারির ১০-১৫ তারিখের মধ্যে শুনি যে তারা দল গঠনের প্রক্রিয়ায় ঢুকে গেছে৷ আমি দলের সঙ্গে যেতে আগ্রহী ছিলাম না৷ জানুয়ারির শেষ দিকে আমি ঠিক করে ফেলি যে এই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আমি আর থাকব না৷ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে প্ল্যাটফর্মের কয়েকজন এসে আমাকে বলে যে "আপু, আপনি আসেন; আমরা নতুন করে এই প্ল্যাটফর্মটাকে গড়ে তোলার চেষ্টা করি৷" পরে একসময় অভিযোগ করা হয়, আমি প্ল্যাটফর্ম দখলের চেষ্টা করছি৷...আমি এটাকসব সময়ময় দায়িত্ব হিসেবে দেখেছি৷ এই প্ল্যাটফর্মকে আমার কাছে খুব বেশি মূল্যবান মনে হচ্ছিল না৷ যদিও অনেকের কাছে খুব মূল্যবান ছিল, কারণ এটা নিয়ে ডিসি-এসপি কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দৌড়ানো যেত।

উমামা বলে চলেন, 'ন্যূনতম আত্মসম্মান আছে, এমন কেউ এই প্ল্যাটফর্মে (বৈষম্যবিরোধী) টিকতে পারবে না৷ এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে থাকাটা আমার জীবনের একটা ট্র্যাজিক ঘটনা ছিল৷ যে মানুষগুলো জুলাইয়ের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেছে, আন্দোলনের সম্মুখসারিতে ছিল, তারা যখন খুবই সস্তা কাজ করেন, সেটা আসলে নেওয়া যায় না৷...আমার মনে হয়, গত এক বছরে আমার অনেক সময় নষ্ট হয়েছে৷ আমি যদি একা কিছু কাজ করার চেষ্টা করতাম, আমি আরও ভালো কিছু করতে পারতাম৷ আমাদের ওপর মানসিক চাপ গেছে, কারণ আমাদের তো দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন ছিল৷ আরেকজনের মধ্যে হয়তো স্বপ্ন না-ই থাকতে পারে৷ তাদের হয়তো স্বপ্ন ছিল চাঁদাবাজি করবে৷ আমাকে ডেকে এনে আপনি একটা টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করেছেন৷ আমি টিস্যু পেপার না তো!'

মুখপাত্র হওয়ার আগে ধারণা ছিল না

ফেসবুক লাইভের শেষাংশে উমামা ফাতেমা বলেছেন, জুলাই একটা অনেক বড় ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল৷ সবার জন্যই বড় একটা ট্রমা বলা যায়৷ মানুষ রাস্তায় যে পরিমাণ ফাইট করেছে, সেটা অবিশ্বাস্য! আমার মাথায় একবারও আসেইনি যে এটা দিয়ে টাকাও ইনকাম করা যায়! আমি মুখপাত্র হওয়ার পর প্রথম আবিষ্কার করেছি যে এগুলো দিয়ে লোকজন নানা কিছু করছে৷ টেন্ডার বাণিজ্য, তদবির বাণিজ্য, ডিসি নিয়োগ, তমুক জায়গায় তমুক কাজ- এগুলো নাকি অহরহ করে বেড়াচ্ছে! মুখপাত্র হওয়ার আগে এগুলো নিয়ে আমার ধারণা ছিল না৷

উমামা ফাতেমা আরও বলেন, 'জুলাই-আগস্ট একটা লিভড এক্সপেরিয়েন্স আমার কখনো মাথায়ই আসেনি যে এগুলো দিয়ে টাকা-পয়সা ইনকাম করা যায়৷ তাহলে হোয়াই ইন দ্য আর্থ এটাকে আমি একটা মানি মেকিং মেশিনে পরিণত করতে যাব? কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয়েছে৷ খুবই কমন, খুবই রেগুলার বেসিসেই হয়ে এসেছে৷ অনেকে বলেন যে আমি হাজার-কোটি টাকা কামিয়েছি৷ আমি এতটুকু বলতে পারি, আই হ্যাভ এ প্রিটি গুড লাইফ৷ আমি যথেষ্ট ওয়েল-অফ ফ্যামিলি থেকে বিলং করি৷ জীবনে এত খারাপ অবস্থা আসেনি৷ আমার বিদেশে যেতে স্কলারশিপের জন্যও দরকার নেই এসব পরিচয়৷ আল্লাহ আমাকে সিজিপিএ-ও দিয়েছে ভালো, আমি ভালো সাবজেক্টেও পড়েছি৷ সৌভাগ্যজনকভাবে আমার পরিবারেরও আমার প্রতি সেই সাপোর্টটা আছে৷ তাঁরা আমাকে কোনো মানি মেকিং মেশিন হিসেবে ব্যবহার করে না৷ পরিবার আমাকে একটা হিউম্যান বিং হিসেবে দেখে এবং চায় যে দেশের জন্য আমি ভালো কিছু করি৷'

এই সম্পর্কিত আরো

নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে শান্তিগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

‘আগামী নির্বাচনে জনগণ আরেকবার রায় দেবে, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক’

ফেসবুক পোস্টে বড় সংঘাত শেষ করলো নবীগঞ্জ প্রশাসন

দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস-২০২৫ উদযাপন: মানসিক স্বাস্থ্য একটি মানবিক জরুরি অবস্থা

হর্ন ব্যবহারে বিআরটিএ’র নির্দেশনা, নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা

বানিয়াচংয়ে ছিন্নমুল ও অসহায় মানুষদের মাঝে ছাত্রদলের খাবার বিতরন

ওসমানীনগরে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ ও বিক্ষোভ মিছিল

কুলাউড়ায় ৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন 'জুলাই যোদ্ধা' রানা