জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক আলী আহসান জুনায়েদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, আগামী মাসেই সেই প্ল্যাটফর্মটি আত্মপ্রকাশ করবে।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মূল নেতৃত্বে দেখা গেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্মটিকে। তাদের সঙ্গে দেশের জনগণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনগুলোও এই অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালানোর পর প্ল্যাটফর্মটি আরও বিস্তৃত হয়েছে। সেইসঙ্গে প্ল্যাটফর্মটির নেতাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’র উত্থান হয়। এরপর এই দুই প্ল্যাটফর্মের নেতাদের নিয়ে পরবর্তীতে গঠিত হয় তরুণদের রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)।
এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ে আলী আহসান জুনায়েদের থাকার কথা থাকলেও কিছু কারণে তিনি আর শেষ পর্যন্ত নতুন দলে যোগ দেননি। এবার তিনিই নিয়ে আসছেন নতুন প্ল্যাটফর্ম। ফেসবুক পোস্টে জুনায়েদ নিজেকে প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
পোস্টে জুনায়েদ বলেন, ৩৬শে জুলাই ফতহে গণভবনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা হলেও, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বহু মানুষের কাছে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পিলখানা, শাপলা ও জুলাই গণহত্যার মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচার, ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সামাজিক ও রাজনৈতিক কাঠামো নির্মাণ, ধর্মবিদ্বেষ ও ইসলামোফোবিয়ামুক্ত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গঠন, ফ্যাসিবাদী কাঠামোর সম্পূর্ণ বিলোপ এবং আধিপত্যবাদের বিপক্ষে কার্যকর অবস্থান—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে গৌণ হয়ে পড়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ ও আহত যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও সম্মান দেওয়ার কাজ এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে।
তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম গঠনের উদ্যোগ নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থানের দাবিগুলো প্রকৃতই বাস্তবায়ন করতে চাই।
জুনায়েদ বলেন, ৩৬শে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশে যে বিপ্লবের সূচনা হয়েছে, তা পূর্ণতা দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সমাজের সর্বস্তরে যোগ্য ও নৈতিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সুবিচার ও মানবিক মর্যাদা নিশ্চিতকরণ, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার মূলোৎপাটন এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারলে এ বিপ্লব পরিপূর্ণতা পাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি, নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সামাজিক চুক্তির ভিত্তিতে বাংলাদেশ পুনর্গঠন সম্ভব।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এই উদ্যোগে সবাইকে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জুনায়েদ লিখেছেন, আসুন, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গঠনের এই সংগ্রামে শামিল হই।
পোস্টের কমেন্টবক্সে একটি গুগল ফর্ম যুক্ত করেন তিনি।