সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয় বলে নিজেদের দলের অবস্থান জানালেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। আজ সোমবার নড়াইল সদর উপজেলার হবখালী হামিদুন্নেসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের সাবেক আমির নুরুন নবীর (জিহাদী) জানাজায় অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘কেউ কেউ বলছেন, “এত সংস্কার করা সম্ভব নয়। সংস্কার আর নির্বাচন একসাথে চলুক। সংস্কার একটা চলমান প্রক্রিয়া।” নানাভাবে তারা বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছেন। গণতান্ত্রিক দেশে যেকোনো রাজনৈতিক দলের মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে আমাদের আমির জাতির উদ্দেশে আগেই বলেছেন, ‘‘কোনো রকম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন ওই আগের মতোই হবে। ’’ আমাদের এই ১৫ বছরের এত শাহাদাত, এত রক্তদান, এত জীবন, এত কোরবানি- সবকিছু বৃথা চলে যাবে। সেই জন্য সংস্কার ছাড়া কোনো নির্বাচন নয়। এটাই আমাদের কথা।’
তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভাগগুলোর সংস্কার সম্পন্ন করা সম্ভব। তারপর অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে রাষ্ট্রীয় প্রস্তুতি নিতে যৌক্তিক সময় দিতে জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বিগত সময়ে রাষ্ট্রের সব বিভাগ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে অল্প সময়ে সংস্কার করা সম্ভব নয়। এটার জন্য সময় লাগবে। এটা নির্বাচিত সরকার এসে করুক, কিন্তু একটা নির্বাচন করার জন্য নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রের যে অঙ্গগুলো সংশ্লিষ্ট আছে, সেগুলো তো সংস্কার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত তাড়াতাড়ি রাজনৈতিক দল এবং স্টেকহোল্ডারদের প্রস্তাবনাগুলো বাছাই করা। প্রয়োজনে সরকার মতবিনিময় করতে পারে এবং খুব অল্প সময়ে সংস্কারগুলো করতে পারে।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের যে গণ–আকাঙ্ক্ষা বা চেতনা ছিল, সেটা হলো একটা কর্তৃত্ববাদী শাসকের হাত থেকে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। আর তার উপায় হচ্ছে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক একটা নির্বাচন। সেই নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো, নির্বাচনটা হতে হবে ১৪, ১৮, ২৪-এর মতো নয়; মানুষ যাতে সহজভাবে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, খুলনা মহানগর জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, নড়াইল জেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমান, সেক্রেটারি ওবায়দুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।