জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন আসনে কোন্দল নিরসনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। যেসব আসনে ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আছে কিংবা ত্যাগী ও যোগ্যদের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি সেসব আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে নির্বাচনের পূর্ণ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে দ্রুত ইশতেহার চূড়ান্ত করা হবে।
গত সোমবার রাতে স্থায়ী কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠক সূত্র জানায়, গত ৩ নভেম্বর ২৩৭ আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করার পর থেকে অর্ধশতাধিক আসনে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটে। এ নিয়ে দল বিব্রত। এরকম পরিস্থিতিতে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করেন নেতারা।
তারা বলেন, বিতর্কিতদের সরিয়ে ত্যাগী ও যোগ্যদের মূল্যায়ন করা হলে অনেক ক্ষেত্রে কোন্দল নিরসন হবে। অনেক আসনে বয়োবৃদ্ধ নেতাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে; যারা চলাফেরা করতেও অন্যের সহায়তা নেন। এমন আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের কথা বলা হয়। নেতারা বলেন, বর্তমান জেন-জি’র যুগে সব জায়গায় পরিবর্তনের হাওয়া শুরু হয়েছে। সেটি বিবেচনায় রেখে মনোনয়ন না দিলে অনেক স্থানেই বিপর্যয় ঘটতে পারে।
৩১ দফা ও জুলাই সনদের প্রতিফলন থাকবে ইশতেহারে
বৈঠকে নির্বাচনের ইশতেহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইশতেহারে এবং নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় কী কী বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে নেতারা মতামত দিয়েছেন। এতে বিএনপির ৩১ দফার মূল বিষয়—অবাধ নির্বাচন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোট, নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, মানবাধিকার সুরক্ষা, বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছ প্রশাসন এবং জাতীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এছাড়া জুলাই সনদের আলোকে নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে পূর্ণ স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা দেওয়ার পরিকল্পনাও গুরুত্ব পাবে।
তারেক রহমানের বক্তব্যই মূল দিকনির্দেশনা
লন্ডন থেকে ভিডিও বার্তা, ভার্চুয়াল আলোচনা ও সামাজিক মাধ্যমে তারেক রহমান নিয়মিতই গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের কথা তুলে ধরছেন। তাঁর বক্তব্যে গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ও জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা–এসব বিষয় বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। দলীয় সূত্র বলছে, এসবই ইশতেহারে প্রতিফলিত হবে। তপশিল ঘোষণার পর বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ইশতেহার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।