মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
রাজনীতি

তারেক রহমানের ফোন পেলেন পাঁচ নেতা, বাকিরা হতাশ

বগুড়ায় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকেই হতাশ হয়ে মাঠ ছেড়েছেন। আবার কোনও কোনও আসনে ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়া প্রার্থীর বিপরীতে অন্যরা একাট্টা হয়েছেন। যদিও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ– যাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তারপরও বগুড়ায় মনোনয়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার সাতটি সংসদীয় আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ৩৯ নেতা কয়েক মাস থেকে মাঠে কাজ করছেন। এর মধ্যে ২৪ জনের সঙ্গে গত ১১ অক্টোবর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে ভার্চুয়ালি কথা বলেন তারেক রহমান। এতে বাকি ১৫ মনোনয়নপ্রত্যাশী হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়েন। তারেক রহমান ওই ২৪ নেতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনা দিলে তারা  স্ব স্ব এলাকায় গিয়ে দলীয় কর্মকান্ড বাড়িয়ে দেন। পরে গত ১৪ অক্টোবর রাতে তারেক রহমান পাঁচটি আসনের পাঁচ মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এসময় তিনি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে খোঁজ খবর নেন। এরপরই পরিস্থিতি বদলে যায়।

এই পাঁচ নেতা হলেন বগুড়া-১(সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে শিবগঞ্জ বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মীর শাহে আলম, বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাচিয়া) আসনে আদমদীঘি বিএনপির সভাপতি আব্দুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন এবং বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের কোন মনোনয়নপ্রত্যাশীর সঙ্গে তারেক রহমান ওই দিন কথা বলেননি।

ওই ৫ নেতার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর তাদের অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন যে তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। তারা আগের চেয়ে এলাকায় গণসংযোগও বাড়িয়ে দেন।

তারেক রহমানের ফোন পাওয়া বগুড়া-৩ আসনের আব্দুল মোহিত তালুকদার বলেন, ১৪ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে তারেক রহমান ফোন করে নির্বাচন সর্ম্পকে খোঁজ খবর নেন। মাঠে গণসংযোগ বাড়াতে বলেন। তাতে মনে হয়েছে, আমি হয়তো মনোনয়ন পাবো। আমার সমর্থকরাও তাই মনে করছেন।

বগুড়া-১ আসনের কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, রাত পৌনে ১১টার দিকে তারেক রহমান ফোন করে নির্বাচনীর প্রস্তুতি সর্ম্পকে জানতে চান। তিনি বিশাল বিজয় আনার ব্যাপারে পরামর্শ দেন। তারেক রহমানের ফোন পেয়ে আমি বেশ অনুপ্রানিত। ফেসবুকে ‘আলহামুল্লিাহ’ লিখে পোষ্ট দেই। এই পোষ্ট দেখে আমার অনুসারীরা ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে দেন।

এদিকে অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বগুড়া-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মহিদুল ইসলাম রিপন আগে মাঠে গণসংযোগ করলেও তাকে না ডাকায় তিনি হতাশ হয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তবে রিপন দাবি করেন, এখনও মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি। তাই আমি মাঠ ছাড়িনি। মনোনয়নের আশায় কিছু করি না। বিএনপি আমার দল, তাই বিএনপির জন্য কাজ করে যাবো।

বগুড়া-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ফজলে রাব্বি তোহা দীর্ঘদিন এলাকায় কাজ করে আসছেন। তবে ডাক না পাওয়ায় তিনি কিছুটা হতাশ। তোহা বলেন, আমি কয়েকদিন ব্যস্ততার কারণে মাঠে ছিলাম না। এখন আবার মাঠে নামবো। আশা করি, দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।

বগুড়া-৫ আসনের পাঁচ মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের সঙ্গে তারেক রহমান কথা বলায় বাকি চার নেতার তিনজন একাট্টা হয়েছেন। তারা হলেন ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহাবুবর রহমান হারেজ ও ধুনট উপজেলা বিএনপির সভাপতি তৌহিদুল রহমান মামুন। তারা গত রোববার আসনটির শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী এলাকায় ধানের শীষের পক্ষে সমাবেশ করেন। সেখানে তারা গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের পক্ষে কোন কথা বলেননি।

দলীয় সূত্র জানায়, ওই তিন নেতা সিরাজ বিরোধী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। তারা সিরাজকে মনোনয়ন দিলে মেনে নেবেন না। তাই তারা আগেভাগেই একাট্টা হয়েছেন। তবে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ধুনট বিএনপির সভাপতি তৌহিদুর রহমান মামুন বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ধানের শীষের জন্য কাজ করতে বলেছেন, তাই আমরা একাট্টা হয়ে কাজ করছি। আমরা গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের বিরোধীতা করছি না। কারণ এখনও তার মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি।

এই সম্পর্কিত আরো