প্রশাসন ক্যাডারের বৈষম্যমূলক আচরণ, ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা, কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডিএস পুলের কোটা বাতিল ও সব ক্যাডারের সমতা বিধানের দাবিতে সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার ঐক্যবদ্ধভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। দ্রুত এসব দাবি মেনে না নিলে সামনে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর ব্যানারে মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অথচ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য, সরকারি বিধি-বিধান ভঙ্গ করে মন্ত্রণালয়ে মারামারি ও মিছিল করার পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটিকে প্রশাসন ক্যাডারের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণের সুস্পষ্ট প্রমাণ।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রেখে অন্য ২৫টি ক্যাডারের জন্য ৫০ শতাংশ পরীক্ষার ভিত্তিতে নিয়োগের সুপারিশ করে। ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় মানববন্ধন থেকে।
কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন, একটি নির্দিষ্ট ক্যাডারের গোষ্ঠী-স্বার্থে উদ্দেশ্যমূলকভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক, পরিবার-পরিকল্পনা, কাস্টমস ও ট্যাক্স ক্যাডারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। পক্ষপাতদুষ্ট জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা ছাড়া একটি ক্যাডারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে।
পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সব ক্যাডারের সমতা বিধান ও বিভিন্ন ক্যাডারে সৃষ্ট জটিলতা দ্রুত নিরসনের আহ্বান জানানো হয়। তারা ডিএস পুলের কোটাকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না বলে জানিয়ে দেয় এবং এটিকে জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও সব কোটা বাতিলের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে উল্লেখ করে।
পরিষদের কর্মকর্তারা আরও জানান, জবাবদিহিমূলক জনবান্ধব সিভিল প্রশাসনের দাবিতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামী ২৬ মে তারিখের মধ্যে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলা প্রত্যাহার করা না হলে আগামী ২৭ ও ২৮ মে তারিখে অর্ধদিবস (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত) কলমবিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ২ মার্চ তারিখে একই দাবিতে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি এবং গত বছর ২৪ ডিসেম্বর তারিখে সারা দেশে ১ ঘণ্টার কলম বিরতি কর্মসূচি ও ২৬ ডিসেম্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।