জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে ২৫ রাজনৈতিক দল ও জোট। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তারা জুলাই সনদের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াত সনদে স্বাক্ষর করলেও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিরত থেকেছে।
মূলত সনদের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানায় দলটি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের শুরু থেকে প্রায় সব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও সিনিয়র আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম।
তিনি মনে করেন, জুলাই সনদ চূড়ান্ত হলেও গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ইস্যুতে এই সনদে বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে কোনো বিষয় উল্লেখ নেই।
ঐকমত্য কমিশনের একটি সূত্র জানায়, আগেই বাস্তবায়ন ঠিক করা হলে হয়ত কোনো কোনো দল সনদে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকত। যে কারণে সেই সিদ্ধান্ত ঐকমত্য কমিশন নিজে না নিয়ে সরকারের ওপর ছেড়ে দিচ্ছে।
এদিকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় খুঁজে পেতে গত ১১ই সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত বা সম্মতি নেওয়ার জন্য একটি গণভোট আয়োজনের কথাও জানায় তারা।
গত ৫ অক্টোবর কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ও তাদের সম্মতির জন্য গণভোটের বিষয়ে সব দল একমত হয়েছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, গণভোটের বিষয়ে সব দল একমত হলেও কবে, কীভাবে এবং কোন কোন বিষয় তাতে থাকবে সেটি এখনই চূড়ান্ত নয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেদিন অনুষ্ঠিত হবে, সেই একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের সম্ভাব্যতাও যাচাই করা হচ্ছে। তবে সরকার এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না জানানোয় এ নিয়ে এখনই কোনো মতামত দেয়নি কমিশন।
গণভোট ইস্যুতে সরকার বা নির্বাচন কমিশন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না জানালেও এরই মধ্যে গণভোট ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নানা মতপার্থক্য ও বিরোধ দেখা যাচ্ছে।
গণভোট ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান আগামী জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা। তবে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি দল নির্বাচনের আগেই গণভোটের পক্ষে।
যদিও এই গণভোট ইস্যুটি এখনো পুরোটাই ধোঁয়াশার মধ্যেই থাকছে যতক্ষণ না অন্তর্বর্তী সরকার এটি নিয়ে তাদের চূড়ান্ত মতামত জানাচ্ছে। আর তাই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়েও এখনো নিশ্চিতভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না।