যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির হাউজিং বিষয়ক মন্ত্রী রুশনারা আলীর বিরুদ্ধে বিতর্কের ঝড় বইছে। তিনি পূর্ব লন্ডনের নিজস্ব টাউনহাউস থেকে চারজন ভাড়াটিয়াকে বের করে দিয়েছেন। তারপর বাড়িভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছেন মাসে ৭০০ পাউন্ড। এ নিয়েই চলছে তুমুল সমালোচনা।
দ্য আই পেপারের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এমপি রুশনারা নিজেই একটা সময় ভাড়াটিয়াদের শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন। এমনকি তার সরকার ক্ষমতায় আসলে অহেতুক বাড়িভাড়া বাড়ানোর বিরুদ্ধে কাজ করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
লেবার পার্টির প্রস্তাবিত ‘ভাড়াটিয়াদের অধিকার বিল’ আগামী বছর আইনে পরিণত হওয়ার কথা রয়েছে। বিলটি আইনে পরিণত হলে কোনো মালিক যদি বাড়ি বিক্রির জন্য ভাড়াটিয়াকে বের করে দেন, তাহলে ভাড়াটিয়ারা চলে যাওয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে সেটি নতুন করে বেশি টাকায় ভাড়া দিতে পারবেন না।
রুশনারা আলীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তার ভাড়াটিয়ারা চুক্তি নবায়ন করবে না বলে জানায়। তাই তাদের রোলিং চুক্তির ভিত্তিতে থাকার সুযোগও দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি বাড়িটি বিক্রির জন্য সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ক্রেতা না পাওয়ায় পরে আবার ভাড়াটিয়া তোলেন।
রুশনারার একজন মুখপাত্র বলেন, ‘রুশনারা তার দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পালন করেন এবং প্রাসঙ্গিক সকল আইন মেনে চলেছেন।’
তবে কনজারভেটিভ দলের ছায়া হাউজিং সেক্রেটারি জেমস ক্লেভারলি বলেন, এই অভিযোগগুলো যদি সত্যি হয়, তা হলে এটি ’চরম মাপের ভণ্ডামি’ হবে এবং তার হাউজিং বিষয়ক মন্ত্রী পদে থাকা উচিত নয়।
গত মার্চে রুশনারা তার চার বেডরুমের টাউনহাউসটি মাসিক ৩,৩০০ পাউন্ডের বিনিময়ে ভাড়া দেন। বাড়িটি লন্ডনের অলিম্পিক পার্ক থেকে এক মাইলের কম দূরে অবস্থিত।
তৎকালীন ভাড়াটিয়া লরা জ্যাকসন একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী। তিনি ভুক্তভোগী চার ভাড়াটিয়ার মধ্যে একজন। তার কাছে নভেম্বরে একটি ইমেইল আসে। ইমেইলে বলা হয় তাদের ভাড়া নেওয়ার চুক্তি নবায়ন হবে না। চার মাসের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে হবে।
তবে ভাড়াটিয়া বাড়ি ছাড়ার কয়েক সপ্তাহ পরই লরা দেখতে পান সেখানে আবারও ভাড়াটিয়া তোলা হয়েছে। আর তাদের থেকে মাসিক প্রায় ৪,০০০ পাউন্ড ভাড়া নেওয়া হয়েছে। দ্য আই পেপারকে বুধবার নতুন ভাড়াটিয়ারা জানান, তারা চার-পাঁচ মাস আগে উঠেছেন এবং প্রায় ৪ হাজার পাউন্ড ভাড়া দিচ্ছেন।
৩৩ বছর বয়সী জ্যাকসন বলেন, ‘এটা একেবারে হাস্যকর। এত টাকা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে নেওয়ার চেষ্টা করাটা নিপীড়নমূলক।’