ভারতের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন। অভিযোগ ওঠে, তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই নিজের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন।
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় গত মাসে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বিষয়টি সামনে আনেন। তিনি দাবি করেন, ১৯৮০ সালের লোকসভা ভোটের আগে নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় সনিয়ার নাম উঠে যায়। অথচ তখনও তিনি নাগরিকত্ব পাননি।
অমিত মালবীয়র অভিযোগ ছিল, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আঁতাত করে গান্ধী পরিবার ক্ষমতার প্রভাবে এই কাজ করেছিল। তিনি ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকার একটি ছবি প্রকাশ করেন যেটিকে তিনি প্রমাণ হিসেবে দেখান।
বিজেপির অভিযোগ অনুযায়ী ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সনিয়ার নাম তালিকাভুক্ত ছিল। অথচ সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৮৩ সালে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তিনি। আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা হয়। যেখানে আবেদনকারী বলেন ১৯৮৩ সালের এপ্রিল নাগাদ নাগরিকত্ব পাওয়া সত্ত্বেও ১৯৮০ সালের জানুয়ারি থেকে তার নাম ভোটার তালিকায় ছিল, যা সরাসরি নির্বাচনী বিধির লঙ্ঘন।
সেই আবেদন খারিজ করে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিল অভিযোগের ভিত্তি প্রমাণের মতো উপাদান নেই। আদালতের রায় প্রকাশের পর কংগ্রেস শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বইছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু পুরনো এই অভিযোগকে বিজেপি নতুন করে সামনে এনেছিল মূলত রাজনৈতিক আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে। নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ তুলে সনিয়াকে কোণঠাসা করার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু আদালতের রায়ে সেই চেষ্টা কার্যকর হলো না। তবে বিরোধীরা বলছে, আদালতের খারিজ মানেই অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়। বরং বিষয়টি আবারও জনমানসে সন্দেহ তৈরি করেছে।
ইতালিতে জন্ম নেওয়া সনিয়া ১৯৬৮ সালে রাজীব গান্ধীর সঙ্গে বিবাহের পর ভারতের রাজনৈতিক পরিবারে আসেন। পরে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তারপর থেকেই কংগ্রেসের নেতৃত্বে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের রায় তাকে আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত করলেও বিরোধীদের আক্রমণ এখানেই শেষ হবে না। নির্বাচনী রাজনীতির অঙ্গনে এই বিষয়কে ব্যবহার করা হবেই।