মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

জেন-জিদের দখলে পুরো নেপাল

লাগামহীন দুর্নীতি ও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম  বন্ধের প্রতিবাদে নেপালের জেন-জিদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো নেপাল জুড়ে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই শুরু হয় বিক্ষোভ। আগের দিন পার্লামেন্টের ভবনের সামনে শুরু হওয়া আন্দোলনে ২০ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে কাঠমান্ডুর পাশপাশের শহরগুলো। দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভের শুরুতে পদত্যাগ করেন দেশটির কৃষিমন্ত্রী। এর আগে পদত্যাগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক। তবে জেন-জিদের এখন একটাই দাবি অলি শর্মা সরকারের পত্যাগ। এই দাবিতে কাঠমান্ডুর বানেশ্বর, নকশাল, ভক্তপুর, ললিতপুরে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা নেমেছেন। আতঙ্কে সকল দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। সকাল থেকে দফায় দফায় সভা করছে কেপি শর্মা অলির সরকার। স্থানীয়দের কাছে শোনা যাচ্ছে যেকোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে পারেন তিনি।

এদিকে ম্যাচ বাতিল হওয়ায় বিকাল তিনটার ফ্লাইটে ঢাকা ফিরছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল।
এরআগে সোমবার সকালে রাজধানী কাঠমান্ডুর বাণেশ্বর এলাকায় প্রথম বিক্ষোভ শুরু হয়, অল্প সময়ের মধ্যে কাঠমান্ডুর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দমনে শেটির পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। পার্লামেন্ট ভবনে ঢোকার সময়ে পুলিশের গুলিতে আটজন নিহত হয়। পরে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০-এ। তবে মঙ্গলবার অতোটা হার্ড লাইনে দেখা যায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। থামেলের মুসলিম টোল এলাকাতে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রাস্তায় টায়ায় জ্বালিয়ে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। স্থানীয়রা তাদের বাড়ি থেকে পুরোনো কাঠ, চেয়ার দিয়ে বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় আগুন জ্বালাতে সহায়তা করছেন। অনেককে পানিসহ শুকনো খাবার দিচ্ছেন। একটু একটু পর পর পুলিশ এসে আন্দোলনকারীদের জল কামান ও গরম পানি নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চলে যাওয়ার পর তারা আবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করছেন। ‘অলি সরকার মুর্দাবাদ’, ‘জেন-জি জিন্দাবাদ’, ‘কেপি শর্মা মুর্দাবাদ’ ‘জেন-জি জিন্দাবাদ’, ‘মন্ত্রীরা চোর, প্রচন্ড চোর’ ইত্যাদি নানা স্লোগান দিচ্ছেন। কাঠমান্ডুর সিনিয়র সাংবাদিক প্রজ্জল অলি জানান, খুব ভোর থেকে কাঠমান্ডুর অলিগলিতে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। তাদের বিক্ষোভের মুখে পুরো কাঠমান্ডুতে কারফিউ জারি করেছে সরকার। মাইকিং করে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সর্বত্র আতঙ্ক। আন্দোলনকারী চাপের মুখে যেকোনো মুহূর্তে অলি সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারেন।

গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটা বিরোধী আন্দোলন এক পর্যায়ে রূপ নিয়েছিল সরকার পতনের আন্দোলনে। আন্দোলনকারীদের দমাতে ইন্টারনেট বন্ধের সঙ্গে সকল যোযোগযোগমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশের মতোই সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নেতৃত্বাধীন সরকার জেন-জিরে দমাতে ফেসবুক, ইউটিউব এবং এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধের ঘোষণা করে সরকার। এর প্রতিবদে রাজধানী কাঠমান্ডুতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন হিমালয় কন্যা খ্যাত দেশটির অন্যান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীদের তোপেরমুখে সোমবার রাতেই সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম খুলে দেয়  কেপি সরকার। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে। হোটেলে আটকা পড়েছেন পর্যটকররা।

এই সম্পর্কিত আরো