শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহেকে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপব্যবহারের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযোগটি তার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বিদেশ সফরের খরচকে ঘিরে।
শুক্রবার রাজধানী কলম্বোর একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হবে। এর আগে দিনের শুরুতে তিনি অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন।
বিক্রমাসিংহে ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে তার পূর্বসূরি গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে তিনি দায়িত্ব নেন। পরবর্তীতে দেশকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের পথে ফেরানোর কৃতিত্ব তার ঝুলিতেই যুক্ত হয়।
৭৬ বছর বয়সি এই নেতা ছয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছেন। বিবিসি সিনহালার তথ্যমতে, প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি ২৩টি বিদেশ সফর করেন, যার খরচ হয়েছে ৬০০ মিলিয়ন শ্রীলঙ্কান রুপি (প্রায় ২০ লাখ ডলার)।
শুক্রবারের গ্রেফতারের অভিযোগটি ২০২৩ সালের এক সফরকে ঘিরে। ওই বছর কিউবার জি–৭৭ সম্মেলন শেষে দেশে ফেরার পথে তিনি যুক্তরাজ্যে যাত্রাবিরতি করেন এবং স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে উলভারহ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সিআইডির দাবি—এটি ছিল ব্যক্তিগত সফর, অথচ রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহার করা হয়। বিক্রমাসিংহে অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্ত গত জুনে আদালতে পাঠানো হয়েছিল।
শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে এটাই প্রথম কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টের গ্রেফতার।
আইনজীবী হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা বিক্রমাসিংহে ধনী রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৯৪ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি)-র নেতৃত্ব নেওয়ার পর তিনি দলকে সংস্কারের পথে নিয়ে যান এবং দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের সরাতে শৃঙ্খলা কমিশন গঠন করেন।
বছরের পর বছর প্রেসিডেন্ট হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও অবশেষে ২০২২ সালে তিনি সেই পদে বসেন—যখন তার দল প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং সংসদে তিনি ছিলেন একমাত্র প্রতিনিধি।
সূত্র: বিবিসি