আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ২ বিচারক ও ২ জন ডেপুটি প্রসিকিউটরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা বিচারকের মধ্যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় অনুমোদনকারী বিচারকও রয়েছেন।
বুধবার মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল জানায়, নিকোলা ইয়ান জিলু, নাজহাত শামীম খান, মামে মান্দিয়ায়ে নিয়াং এবং কিম্বারলি প্রোস্টকে স্পেশালি ডিজাইনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা অনুমোদন করায় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন ফরাসি বিচারক জিলু। আর কানাডিয়ান বিচারক প্রোস্ট আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অনুমোদনের কারণে শাস্তির মুখে পড়েছেন।
জিলু আইসিসির প্রী-ট্রায়াল চেম্বার–১ এর সদস্য, যা ২০২৪ সালের নভেম্বরে নেতানিয়াহু ও গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। অভিযোগে বলা হয়, দুজনই গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বেআইনি পদক্ষেপে আইসিসিকে সমর্থন করায় ডেপুটি প্রসিকিউটর খান ও নিয়াংকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তারা প্রসিকিউটর অফিসের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই ইসরায়েলি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানাগুলো বহাল রেখেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২০৩ এর অধীনে, যা আইসিসির ‘বেআইনি কর্মকাণ্ড’ ঠেকাতে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘অন্যায় কার্যকলাপ’ করা ব্যক্তিদের শাস্তি দিতে প্রণয়ন করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও চার কর্মকর্তা ও আইসিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের নাগরিকদের তদন্ত, গ্রেপ্তার, আটক বা বিচার করার চেষ্টা করছে—যা দুই দেশের সম্মতি ছাড়া করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই আইসিসির রাজনৈতিকীকরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি অবজ্ঞা ও বেআইনি বিচারিক ক্ষমতার বিরোধিতা করে এসেছে।
এই আদালতকে ওয়াশিংটন ও তেলআবিবের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যা দেন রুবিও।
নিষেধাজ্ঞার ফলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বা মার্কিন নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন সব সম্পত্তি ও স্বার্থ এখন ব্লক করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্তদের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি মালিকানায় যেসব প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে।
ওয়াশিংটন আইসিসির সদস্য নয়। এর আগে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন আইসিসি ও প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান কেসি-র ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। তখন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল, আদালত ‘ভিত্তিহীন ও বেআইনি পদক্ষেপে’ আমেরিকা ও ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।