জাতিসংঘে একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনিতা আনন্দ সোমবার ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি তার দেশের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি এই সমাধানকে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা ও শান্তির জন্য অত্যাবশ্যক বলে উল্লেখ করেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
‘ফিলিস্তিন প্রশ্ন মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতার আশার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে,’ বলেন আনন্দ। ‘পরিস্থিতির জটিলতা সত্ত্বেও আমাদের সম্মিলিত উপস্থিতিই প্রমাণ করে যে, একটি আলোচনাভিত্তিক সমাধানের পক্ষে আন্তর্জাতিকভাবে শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে — একটি সমাধান যা ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করবে এবং ইসরাইলের নিরাপত্তাও বজায় রাখবে।’
তিনি বলেন, ‘কানাডা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ — যাতে একটি স্বাধীন, কার্যকর ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বসবাস করতে পারে।’
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার দিকেও গুরুত্ব দেন আনন্দ। তিনি বলেন, ‘পশ্চিম তীর এবং গাজা উভয় অঞ্চল পরিচালনার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য একটি সমন্বিত সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
গাজায় চলমান ‘বিপর্যয়কর’ মানবিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘অনেক ফিলিস্তিনি অনাহারে মৃত্যুবরণ করছে। খাবার ও পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে অথবা কোনো সামরিক অভিযানের সময় তাদের হত্যা করা হচ্ছে। যারা বেঁচে আছে, তারা আবার এড়ানো সম্ভব এমন রোগব্যাধি ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।’
ইসরাইলি বসতি সম্প্রসারণ ও সহিংসতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা বেসামরিক নাগরিকদের, বিশেষ করে শিশুদের, নির্মম হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। আমরা ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে অব্যাহত বসতি সম্প্রসারণ ও বসতি-বাসিন্দাদের সহিংসতার নিন্দা জানাই। আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের জোরপূর্বক উচ্ছেদেরও নিন্দা করি।’
‘উল্লিখিত প্রতিটি কাজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন,’ যোগ করেন তিনি।
সম্মেলনে কানাডা নতুন করে ৪ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে ১ কোটি ডলার ব্যয় হবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারমূলক উদ্যোগে এবং বাকি ৩ কোটি ডলার ব্যয় হবে গাজার সাধারণ নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রস্তুত রাখতে।
‘এই সম্মেলন আমাদের নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করার একটি সুযোগ এবং একই সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান,’ বলেন আনন্দ। ‘একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের জন্য স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন, যেন আমরা প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন, বিশ্বাস পুনঃস্থাপন এবং একটি টেকসই দুই রাষ্ট্র সমাধানের শর্ত তৈরির মতো কঠিন কাজ শুরু করতে পারি।’