সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
✔ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শিরোনাম
advertisement
আন্তর্জাতিক

ইরানি হামলায় ভীত-সন্ত্রস্ত ইসরাইলিরা

ইসরাইলের শুক্রবারের আকস্মিক হামলার দাঁতভাঙা জবাব দিচ্ছে ইরান। পালটা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তেল আবিবের বেশ কিছু ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে তেহরান। দাবি করা হচ্ছে আয়রন ডোম ধ্বংস করার। এমন পরিস্থিতিতে ইরানি হামলায় ভীত-সন্ত্রস্ত তেল আবিবের বাসিন্দারা।

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের মুহুর্মুহু আঘাতে বেশির ভাগ বাসিন্দাকেই আশ্রয় নিতে হয় আশ্রয় কেন্দ্রে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাবার পানি ও শুকনা খাবার মজুদ করতেও দেখা গেছে দেশটির বাসিন্দাদের। অথচ, ইরানে হামলা চালানো আগে এমনটি কল্পনা করেনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এখন পরিস্থিতি এতটাই জটিল রূপ নিয়েছে যে শেষ পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে সোমবার হতে যাওয়া ছেলের বিয়ের দিনক্ষণ পেছাতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের হামলায় হতবিহবল ও ভীত হয়ে পড়েছেন ইসরাইলিরা।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের জেরুজালেম প্রতিনিধি জেরেমি ডায়মন্ড ইরানি হামলার পর তেল আবিবের রাস্তায় ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখেছেন। সেখানে উদ্ধারকারী ও সামরিক কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল, চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে এমন দৃশ্য তৈরি হয়েছে।

এক নারী জানান, তিনি তার বাড়ির ভূগর্ভস্থ বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন এবং সেখান থেকেই হামলার ‘তীব্রতা অনুভব’ করেছেন। তিনি ডায়মন্ডকে বলেন, ‘আমরা খুব সাবধানে বেরিয়ে এসেছিলাম, কারণ আমরা ভীত ছিলাম।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা যখন হাঁটছিলাম, তখন ভবনগুলো ধসে পড়ছিল আমাদের চোখের সামনেই।’

ওই নারী বলেন, ‘বাতাসে ধোঁয়ার গন্ধ...আমাকে টি-শার্ট দিয়ে নাক ঢাকতে হয়েছিল। বেসমেন্টে বিষাক্ত নিশ্বাস নেওয়া থেকে বাঁচতে আমাদের খোলা রাস্তায় বেরিয়ে এসে হাঁটতে হয়েছে।’

ডায়মন্ড জানান, ঘটনাস্থলের কাছে একটি আবাসিক ভবন আংশিকভাবে ধসে পড়েছে এবং কয়েক ব্লক দূর থেকেও ধ্বংসাবশেষ দেখা যাচ্ছে। তিনি আরও জানান, অন্তত ১০ জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বিপুল পরিমাণ মানুষ হামলার ক্ষয়ক্ষতি দেখতে বেরিয়ে এসেছিলেন এবং পরিবার ও বন্ধুরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। ইরানি হামলার ধাক্কা সেখানকার বাসিন্দাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

ডায়মন্ড বলেন, ‘১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকে তেল আবিব ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় এত ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি আর কখনোই হয়নি। সেই সময় শহরটিতে স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছিল।’ তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার আগে মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারলে বর্তমান পরিস্থিত ‘অনেক বেশি মারাত্মক’ হতে পারত।

সিএনএনের এই সাংবাদিক বলেন, ‘এই হামলায় বেঁচে যাওয়া প্রতিটি মানুষ, যাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তারা আঘাতের মুহূর্তে কোনো না কোনো বোমা আশ্রয়কেন্দ্র বা ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। এর কারণ হলো, ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার কয়েক ঘণ্টা আগে ইরান থেকে সম্ভাব্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।’

এই সম্পর্কিত আরো