শিলিগুড়ি করিডোরে ভারতের সামরিক তৎপরতা ব্যাপকভাবে বেড়ে গিয়েছে। ভারত তার পূর্ব সীমান্ত শিলিগুড়ি করিডোরে (চিকেন নেক) রাফায়েল যুদ্ধবিমান এবং রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির মতে, এই করিডোরটি ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের একমাত্র স্থল সংযোগ, যা মাত্র ২০-২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এবং বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও চীনের সংযোগস্থলে অবস্থিত।
পাকিস্তানের সাথে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়ে এলেও ভারতের দৃষ্টি এখন বেইজিং এবং ঢাকার দিকে। চীন-ভুটান সীমান্তে সাম্প্রতিক চীনা সামরিক মহড়া এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন নয়াদিল্লিকে আরও সতর্ক করে তুলেছে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ চীনের তৈরি ৩২টি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কিনতে পারে এমন খবর ভারতের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে। এই যুদ্ধবিমানগুলো উন্নত রাডার, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত। যদি এগুলো উত্তর বাংলাদেশের ঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়, তাহলে তা ভারতীয় সীমান্ত ও গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলোর জন্য হুমকি হতে পারে বলে মনে করছে ভারত।
এই অবস্থায় ভারত তার পূর্ব সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ কি.মি. অভ্যন্তরে ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। ভারত শিলিগুড়ি করিডোরে দ্রুত সামরিক সমাবেশের জন্য রাস্তাঘাট, টানেল ও রেল সংযোগ শক্তিশালী করেছে।
দ্য এশিয়া লাইভের মতে, ভারত-ভুটান সীমান্তের কাছে সাম্প্রতিক চীনা সামরিক মহড়া এবং বাংলাদেশে দ্রুত রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে নয়াদিল্লি সজাগ রয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ঢাকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চীন ও পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে পড়ছে বলে জানা গেছে- যা ভারতের পূর্বে কৌশলগত ভারসাম্য পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত তার আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে মানববিহীন বিমান চলাচল (UAV) নিষেধাজ্ঞা কঠোর করেছে এবং সমগ্র পূর্ব সীমান্ত জুড়ে আকাশপথে নজরদারি জোরদার করেছে।
ভারতের এই অবস্থান কেবল একটি সামরিক প্রস্তুতি নয়, এটি একটি কৌশলগত বার্তাও। শিলিগুড়ি করিডোরকে কেবল একটি রাস্তা নয়, এটিকে ভারতের একটি ‘লাল রেখা’ বলে মনে করা হয়। তথ্যসূত্র: জি নিউজ