ইসলামাবাদে নয়াদিল্লির শীর্ষ কূটনীতিক ভারতের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গীতিকা শ্রীবাস্তবকে তলব করেছে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার এ তথ্য দিয়েছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান (এপিপি)।
এপিপি বলছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতের নির্লজ্জ আগ্রাসন পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের নীতিমালার লঙ্ঘন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতের প্রকাশ্য আগ্রাসন পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের প্রচলিত রীতি লঙ্ঘন করেছে। ভারত, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শত্রুসূলভ আচরণের যে অভিযোগ এনেছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন এবং আমরা তা নাকচ করছি।
ভারতীয় পক্ষকে হুশিয়ার করা হয়েছিল যে এ ধরনের বেপরোয়া আচরণ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতি গুরুতর হুমকি।
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলার দুই সপ্তাহ পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মীরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ভারতীয় সামরিক বাহিনী মাত্র ২৫ মিনিটে অন্তত ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে পাকিস্তানে। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।
যদিও পাকিস্তানের দাবি, ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত ও ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে কাশ্মীর সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে অন্তত ১০ জন নিহত ও ৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
এর আগে পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতীয় অন্তত ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। তবে ভারতীয় কর্মকর্তারা জম্মু-কাশ্মীরে এখন পর্যন্ত তিনটি ভারতীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
হামলা-পাল্টা হামলা নিয়ে উভয় দেশের মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকে ভারতের হামলার জবাবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বলেছে, ‘ভারতের নগ্ন আগ্রাসনে সমগ্র পাকিস্তানি জাতি সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা, ত্যাগ ও মাতৃভূমির প্রতিরক্ষায় তাদের সময়োচিত কাজের প্রশংসা করছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি ভারতের অবৈধ কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব স্বীকার এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য দেশটিকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানায়।
পাকিস্তান শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তারা কখনও সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতার লঙ্ঘন বা জনগণের কোনও ক্ষতি হতে না দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।