কিশোর বয়সটি বৃদ্ধি, উদ্যম এবং স্বাধীনতার সময়– এ পর্যায়ে খাবারের পছন্দ-অপছন্দ প্রায়শই জীবনধারা, সামাজিক প্রভাব এবং সুবিধার দ্বারা চালিত। তবে, যে কিশোর-কিশোরীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের জন্য খাবার আরও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল খিদে মেটানো নয়, রক্তে সুগার লেভেল ঠিক রাখতেও সাহায্য করে। সম্প্রতি এ নিয়ে বিস্তারিত কথা বললেন কলকাতার ফর্টিস হাসপাতালের এনডোক্রিনোলজি বিভাগের ডাইরেক্টর এনডোক্রিনোলজিস্ট রচনা মজুমদার।
খাবার এবং ডায়াবেটিসের সম্পর্ক: টাইপ-১ ডায়াবেটিসে শরীর ইনসুলিন তৈরি করে না, আর টাইপ-২ ডায়াবিটিসে শরীর ইনসুলিনকে ঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না। দুই ক্ষেত্রেই খাবার সরাসরি রক্তের সুগার লেভেলকে প্রভাবিত করে। তাই একজন কিশোর কখন, কী এবং কতটা খাচ্ছে, তার ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
সুষম খাদ্যের গুরুত্ব: ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন এবং খনিজের সঠিক ভারসাম্য থাকা উচিত। কার্বোহাইড্রেটের উপর বিশেষভাবে নজর রাখা প্রয়োজন, কারণ এটিই রক্তে গ্লুকোজের উপর দ্রুততম প্রভাব ফেলে। পরিশোধিত শর্করার (refined sugars) পরিবর্তে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যেমন হোল গ্রেইন, ফল এবং সবজি বেছে নিলে রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি রোধ করা যায়। ডিম, চর্বিহীন মাংস, শিম এবং দুগ্ধজাতীয় খাবারের মতো প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, আর বাদাম, বীজ এবং অলিভ অয়েল থেকে আসা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট দীর্ঘস্থায়ী শক্তি সরবরাহ করে।
কিশোর-কিশোরীদের জন্য পরামর্শ: নিয়মিত খাবার খান এবং সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না। মিষ্টি স্ন্যাকস, সোডা এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার সীমিত করুন। মিষ্টি পানীয়ের পরিবর্তে জল বা কম ক্যালোরির পানীয় বেছে নিন। আগে থেকে খাবারের পরিকল্পনা করুন এবং পরিমিত অংশ নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করুন। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বুঝতে খাবারের লেবেল পড়ুন।