পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় একটি ব্যাংকের কার্যালয় থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চুরির উদ্দেশ্যে কার্যালয়ে ঢুকে ওই যুবক লুকিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ভজনপুর বাজার শাখায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই ব্যক্তির নাম শহিদুল হক (২৮)। তিনি তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের সারাপিগছ এলাকার বাসিন্দা। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাগে ড্রিল মেশিন আর প্লাস নিয়ে ‘চুরির উদ্দেশ্যে’ ব্যাংকে ঢুকে লুকিয়েছিলেন শহিদুল হক। পরে ব্যর্থ হয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে ফোন দিয়ে বলছিলেন ‘আমাকে বাঁচান’। এ সময় ব্যাংকের মূল ফটকে বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। পরে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুসা মিয়া বলেন, ওই যুবক চুরির উদ্দেশ্যে ব্যাংকে ঢুকেছিলেন। এমনকি চুরির চেষ্টাও করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাংকের ম্যানেজার বাদী হয়ে চুরির চেষ্টার একটি মামলা করেছেন। তিনি একজন সেনাসদস্য। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে।
তবে আটক শহিদুল হকের ছোট ভাই আইবুল হক বলেন, ‘আমার ভাই সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তিনি ব্যাংকে চুরি বা ডাকাতি করতে যাবেন, এটা কখনোই সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্র করে আমার ভাইকে ফাঁসানো হয়েছে। কারণ, আমার ভাইকে যখন উদ্ধার করা হয়, তখন ব্যাংকের ভেতর তিনি সেন্সলেস (অচেতন) অবস্থায় ছিলেন। আমরা এই ঘটনার সঠিক তদন্ত চাই।’
রাকাব ভজনপুর বাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. নুরুজ্জামান বলেন, গতকাল রাত আটটার পর অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোনে আসে। অন্যপ্রান্ত থেকে বলছিলেন, ‘আমি আপনার ব্যাংকের গ্রাহক, আমাকে বাঁচান।’ এ সময় তিনি তাঁকে কীভাবে বাঁচাবেন এবং তিনি কোথায় আছেন, এসব জানতে চান। বেশ কিছুক্ষণ পর ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি আপনার ব্যাংকের ভেতর আছি, আমাকে বাঁচান।’ তখন তিনি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও নিরাপত্তাপ্রহরীকে জানান। পরে স্থানীয় লোকজনসহ ওই ব্যক্তিকে ব্যাংকের ভেতর থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মো. নুরুজ্জামান বলেন, তিনি মূলত চুরির উদ্দেশ্যে ভেতরে ঢুকেছিলেন এবং ভোল্টের দরজার লগ কাটার চেষ্টাও করেছিলেন।
ভজনপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য তবিবর রহমান বলেন, ‘রাতে খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজনসহ আমরা গিয়ে দেখি ব্যাংকের মেঝেতে ওই যুবক মাথা নিচু করে বসে আছেন।’ তিনি বলেন, শুনেছেন বিকেলে ওই যুবক ব্যাংক থেকে দেড় হাজার টাকা উত্তোলন করে বেরিয়ে যান। এরপর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আবারও ব্যাংকে ঢুকে জেনারেটর রাখার পাশে ফাঁকা স্থানে লুকিয়েছিলেন। পরে নিরাপত্তাপ্রহরী বাইরে থেকে তালা দিয়ে রাতের খাবার খেতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। তাঁর ব্যাগে একটি লোহা কাটার ড্রিল মেশিন, ওই মেশিনের একটি চার্জার, একটি প্লাস ও একটি স্মার্টফোন পাওয়া গেছে।