চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজ মাস্টারের বাড়ির ছেলে প্রবাসী মোহাম্মদ সোহেল ঢালীর পুত্র ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সজীব হোসেন। বিমান দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য সেদিন বেঁচে যায় সে। সেদিনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা জানায় সে।
সজীব জানায়, মাইলস্টোন স্কুলের মধ্যে যখন বিমানটি আছড়ে পড়ল, তখন আমরা স্কুলের মধ্যেই ছিলাম। স্কুল ছুটি হয় দুপুর ১টার দিকে। আমি বাংলা ভার্সনে পড়ি। যখন বাংলা ভার্সন থেকে বের হয়ে আমি আমার বন্ধুর সঙ্গে কথা বলা শেষে হোস্টেলের দিকে যাওয়ার জন্য এগোতেই অর্থাৎ একটি মোড় পেরোতেই আমার পেছনেই বিকট শব্দে বিমানটা আছড়ে পড়ে। এ সময় আমিও একরকম পড়ে যাই। এ সময় পায়েও ব্যথা পাই। ছোটাছুটির একপর্যায়ে আমার স্কুলের শিক্ষার্থীদের চাপে একপাশে পড়ে যাই। হোস্টেলের মামাও গেটে তালা মেরে চলে যায়।
সে বলে- আমি কী করব ভাবার পর ব্যাগটি রেখে পেছনের গেট দিয়ে বের হই। আমি সামনে আসতেই দেখলাম আগুন আর আগুন। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আগুন নেভাচ্ছে। মানুষের জন্য দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এরপর অ্যাম্বুলেন্স আসছে, হেলিকপ্টার আসছে। এর ১০ মিনিট পর আমি সামনে যাইতে চাইলে সেনাবাহিনী যেতে দেয়নি। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী কিছু লোকজনকে মারছে দেখছি। পরে আমি আমার সেকশনে যাওয়ার চেষ্টা করি, পারিনি। পরে আমার শিক্ষক এসে আমাদের সেকশনে নিয়ে যান। আমি দেখেছি অনেক ছাত্রছাত্রী আগুনে পুড়েছে, অনেকে দোড়াদৌড়ি করেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে আমাদের স্কুলের অনেক বন্ধু প্রাণ হারিয়েছে, আগুনের অবস্থা দেখে তাই মনে হয়েছে।
এদিকে সজীবের বাবা প্রবাসী মোহাম্মদ সোহেল ঢালী জানান, টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনার খবর জেনে আমার ওই স্কুলপুড়য়া সন্তানের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। পরিচিতিজনরা যাতে আমার সন্তানের খোঁজ নিতে পারে সেজন্য ফোন ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই। আল্লাহর রহমতে আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেয়েছি, সে সুস্থ রয়েছে। তবে যেসব অভিভাবক তাদের সন্তান হারিয়েছেন, যারা আহত হয়ে হাসপাতালে রয়েছে তাদের জন্য বুকটা ফেটে যাচ্ছে।